যশোরে টগর হত্যাকাণ্ডে ৬বাড়িতে আগুন দিয়ে ভস্মীভূত

জেমস আব্দুর রহিম রানা: যশোর শহরের বারান্দীপাড়া মাঠপাড়ায় টগর হত্যাকাণ্ডের জেরে ছয়টি বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে বাড়ি গুলো পুড়ে পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে গেছে। এর আগে শুক্রবার (১৬ই ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছুরিকাঘাতে জখম টগরের মৃত্যু হয়। সে শহরের বারান্দীপাড়া বটতলা এলাকার মনি হোসেনের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার গভীর রাতে বারান্দীপাড়া কবরস্থান এলাকার ছোট সোহেল, মিলন, সোহাগ, বড় সোহেল ও রমজানসহ ৮/১০জন লোক টগরের খুনি আয়ানের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে নিহত টগরের খুনি আয়ানের বাড়িসহ পাশ্ববর্তী মোস্তফা গাইন, মোশাররফ হোসেন, নূর ইসলাম, মনোয়ারা ও আবুল কালামের বাড়ি আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়। এসময় উত্তেজিত জনতা ছোট সোহেল ও বড় সোহেল নামে দুই দুর্বৃত্তকে ধরে পুলিশে দিয়েছে।

এব্যাপারে পুড়ে যাওয়া বাড়ির মালিক অ্যাডভোকেট তারেক হাসান বলেন, আমি গভীর রাতে সংবাদ পাই আমার ভাড়া দেয়া বাড়িতে আগুন লেগেছে। তাৎক্ষনিক এসে দেখতে পাই দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। পরে আমি ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিলে ফায়ার সার্ভিসের লোক এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। তিনি বলেন, টগর হত্যা মামলার আসামি আয়ান তার একটি ঘরে ভাড়া থাকতেন। শনিবার ঢাকা থেকে লাশ নিয়ে এসে দাফনের পর রাত আনুমানিক ১২টার দিকে টগরের বন্ধুবান্ধব ও তার আত্মীয়-স্বজনরা হত্যাকারী আয়নের থাকা একটি ঘরে আগুন দেয়। এ সময়ে আগুনে মোট ছয়টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ ঘটনায় রাতেই পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে।

আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ বাবু নামে এক ব্যক্তি জানান, আমাদের এখানে ছয়টি বাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার মালামালের ক্ষতি হয়েছে।

যশোর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দেওয়ান সোহেল রানা বলেন, শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১ টার দিকে আগুন লাগার খবর আসে। সাথে সাথে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের পাঠানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে এক ঘন্টা চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। আগুন দেয়া ছয়টি বাড়ি পুরোপুরি বশ্মিভূত হয়ে যায়। তবে কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো নির্ণয় করা সম্ভব নয় বলে জানান এ কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য গত ৯ ফেব্রুয়ারী গভীর রাতে ওই এলাকার আয়ান, মিলন ও শাহিনের নেতৃত্বে এলাকার চিহ্নিত ৭ থেকে ৮ জনের একদল মাদক কারবারী টগরকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পরে তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়। পরে চিকিৎসাধিন অবস্থায় তার মৃতু্য হয়।

এব্যাপারে যশোর কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক মুঠোফোনে জানান, দুপুর ১২টা পর্যন্ত এবিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। তবে তদন্ত চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দুইজনের আটকের বিষয়েও তিনি কিছু জানেনা বলে জানান।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

আমাদের চেষ্টা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ২হাজার ছিন্নমূল মানুষরর মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

নজরুল ইসলাম: সিরাজগঞ্জে শীতের তীব্রতায় প্রয়োজনে পাশে থাকার চেষ্টা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো নৈতিক দায়িত্ব ‘মানুষ মানুষের জন্য’ শীর্ষক কর্মসূচির অংশ হিসেবে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে

এই দেশে আমরা কেউ সংখ্যালঘু না, আমরা সবাই বাংলাদেশী: উপদেষ্টা ড.আসিফ নজরুল

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: অন্তর্বতীকালিন সরকারের আইন, বিচার, সংসদ ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড.আসিফ নজরুল বলেছেন, এই দেশে আমরা কেউ সংখ্যালঘু না, সংখ্যাগুরু না, আমরা সবাই বাংলাদেশী

শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেন দৈনিক ডেসটিনির সম্পাদক মোঃ রফিকুল আমিন 

সেলিম রেজা স্টাফ রিপোর্টার: অবশেষে জামিন পেলেন দেশের বৃহত্তম মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রফিকুল আমীন। আজ বুধবার (৬ই

ড.ইউনূসের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চায় ইউনেস্কো কমিশন’

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর নাম ব্যবহার করে মিথ্যাচার করায় শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস ও ইউনূস সেন্টারের বিরুদ্ধে

সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীরই মুক্তিযোদ্ধা সনদ ‘ভুয়া’, তালিকায় আরো যারা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় শেখ হাসিনার সরকার। ওই সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন আ ক ম মোজাম্মেল হক। মুক্তিযোদ্ধার তালিকা বৃদ্ধি, যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা প্রকাশ

এত বছর আমরাও কথা বলতে পারিনি: পুলিশ কর্মকর্তা নাদিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক জনপ্রিয় পুলিশ কর্মকর্তা নাদিয়া ফারজানা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদের এই কর্মকর্তা বর্তমানে ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত। পুলিশ

বিজ্ঞাপনঃ

আরো খবর দেখুন

গ্রেপ্তারের ভয় ছাড়ছে না বিএনপি নেতাদের’ নিজস্ব প্রতিবেদক দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে প্রকাশ্যে অংশ নিতে শুরু করেছেন। তিন মাস আত্মগোপনে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা যখন ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছেন, তখনো নতুনভাবে গ্রেপ্তারের ভয়ে আছেন তারা। বিএনপির অভিযোগ, গ্রেপ্তারের পাশাপাশি আবারও নতুনভাবে ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় পুরোনো মামলায় নতুনভাবে আসামি দেখিয়ে আটকের ঘটনা ঘটছে। এমন অবস্থায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ভয়ভীতির মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন। গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেকেই ঘরবাড়ি কিংবা এলাকা ছাড়া। জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি’) দ্বাদশ সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিন প্রতিবাদ হিসেবে কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি দিয়েছিল বিএনপি। তারও আগে ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি মহানগর ও জেলা পর্যায়ে একই কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। কিন্তু পুলিশ মঙ্গলবার রাজধানীতে কোথাও কালো পতাকা মিছিল করতে দেয়নি বলে বিএনপির অভিযোগ। বরং ওইদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুনভাবে শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নতুনভাবে দায়েরকৃত ছয়টি মামলায় ৪৫৬ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। ৭০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ওইদিন রাজধানীর উত্তরায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে এবং ধাক্কা দিয়ে জিপে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। যদিও তাকে পরবর্তী সময়ে পুলিশ ছেড়ে দেয়। সে সময় মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদসহ সংগঠনের ৪ নেত্রীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই দিনে বাগেরহাটের রামপালে বিএনপির কালো পতাকা মিছিল থেকে দলটির কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনিও কিছুদিন আগেই মুক্তি পেয়েছিলেন।’ বিএনপির অভিযোগ, গত বছরের ২৮ অক্টোবরের পর বিরোধীদের মাঠে দাঁড়াতে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নেতাকর্মীদের যাকে যেখানে পেয়েছে, গ্রেপ্তার করেছে। এখনো বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তল্লাশির নামে হামলা চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আকবর হোসেন এবং তার পুত্র সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন রনির বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পুলিশ পরিচয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। ওই পরিবারের অভিযোগ, এ সময় বাড়ির লোকজনদের সঙ্গে অশালীন আচরণ ও ‘লুটপাট’ করা হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বন্দুকের নলে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর সরকারের তথাকথিত মন্ত্রি-এমপিরা এখন আরও বেসামাল কথাবার্তা বলছেন। অবৈধ সরকার বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে লেলিয়ে দিয়েছে। সম্প্রতি বিএনপির পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কালো পতাকা মিছিলে হামলা-নির্যাতন চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও বিরোধী নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে পুলিশ পরিচয়ে তল্লাশির নামে হামলা-ভাঙচুর করা হচ্ছে।’ বিএনপির নীতিনির্ধারকরা জানান, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরা ধীরে ধীরে মাঠের রাজনীতিতে ফিরে আসার চেষ্টা করছেন। অনেকেই কারাগার থেকে ছাড়াও পেয়েছেন। হামলা-মামলা উপেক্ষা করে কৌশলে কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের তিন মাস পর গত ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকা ও জেলায় জেলায় কালো পতাকা মিছিলে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায় অনেককে। তাদের এ উপস্থিতি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে আশা জাগিয়েছে। আবারও রাজপথে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে সরকারবিরোধী দলগুলো। কিন্তু গত ৩০ জানুয়ারি সারা দেশে কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় অনেকের মধ্যে আবারও কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে পরবর্তী কর্মসূচি প্রণয়নে বিএনপি কিছুটা সময় নেবে। বিএনপির দপ্তর সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যনুযায়ী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ৪-৫ দিন আগে থেকে অদ্যাবধি মোট গ্রেফতার হন ২৫ হাজার ৬৪৪ জনের বেশি নেতাকর্মী। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন গণমাধ্যমকে বলেন, একতরফা ডামি নির্বাচন করেও স্বস্তিতে নেই অবৈধ সরকার। তাদের সবসময় পতনের আতঙ্ক তাড়া করছে। এজন্যই বিএনপির শীর্ষ নেতাদের জামিন না দিয়ে দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে।’