
নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্রেন্ডস অব ড. ইউনূস’ এই শিরোনামে বেশ কয়েকজন নোবেলজয়ী ব্যক্তি ড. ইউনূসের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছিলেন গত বছর। কিন্তু বর্তমানে সেই বিবৃতিদাতা নোবেলজয়ী স্বনামধন্য বিখ্যাত ব্যক্তিরা কেউই ড. ইউনূসের পাশে নেই। ড. ইউনূসের ডাকে তারা সাড়াও দিচ্ছেন না।’
ড. ইউনূস এখন একাধিক মামলায় বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। সবগুলো মামলাই অর্থ কর ফাঁকি দেওয়া, অর্থ আত্মসাৎ এবং অর্থপাচার সংক্রান্ত। আর এই আইনি জটিলতায় ইউনূসের বন্ধুরা হস্তক্ষেপ করতে চায় না। আইনকে তার নিজস্ব গতিতে প্রবাহিত হতে দিতে চায়।
তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা যাচ্ছে যে, ড. ইউনূসের এর বন্ধুরা এখন তার পাশে নেই সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে। ড. ইউনূসকে সমর্থন করে শতাধিক নোবেলজয়ী ব্যক্তিদের যে বিবৃতিটি বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত হয়েছিল, সেই বিবৃতির প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন হিলারি ক্লিনটন। যিনি ইউনূসের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে চিহ্নিত।
হিলারি ক্লিনটন এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে অত্যন্ত ব্যস্ত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট পার্টি এখন এক জটিল এবং কঠিন সময় পার করছে। বিশেষ করে নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রথম টেলিভিশন বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাইডেনের ধরাশায়ী হওয়ার পর ডেমোক্র্যাট শিবিরে এখন নানা রকম আলাপ আলোচনা চলছে। তাদের দম নেওয়ার ফুরসত নেই।
হিলারি ক্লিন্টন ডেমোক্র্যাট দলের অন্যতম একজন নীতি নির্ধারক বটে। আর এ কারণেই তিনি ড. ইউনূসের বিষয়ের চেয়ে আগামী নির্বাচনের কৌশল নির্ধারণ এবং জো বাইডেনের কোন বিকল্প প্রার্থী দাঁড় করানো হবে কিনা বা এই নির্বাচনে ট্রাম্পকে কীভাবে রুখে দেওয়া যাবে সে নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন।
একই অবস্থা বারাক ওবামার। অন্য যারা এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, তারা অধিকাংশই না বুঝে শুধুমাত্র হিলারি বা বারাক ওবামার অনুরোধেই স্বাক্ষর করেছিলেন। এ কারণে এখন ড. ইউনূসের ব্যাপারে তাদের কোন আগ্রহ নেই। অনেকেই ড. ইউনূসকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনেনও না। তারা নিজস্ব শিক্ষা, গবেষণা ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এই কারণে ড. ইউনূসের পাশে কোন বন্ধুরা নেই।
সাম্প্রতিক সময়ে ড. ইউনূস কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তার পক্ষে সংবাদ প্রকাশ করছেন। সর্বশেষ টাইম ম্যাগাজিনে তিনি তার পক্ষে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ ধরনের প্রতিবেদন কোন প্রভাব ফেলতে পারছে না। বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ড. ইউনূসকে প্রকাশ্য বিতর্কের আহ্বান আহ্বান জানানোর পর ড. ইউনূস তা অন্য কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।’
আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, প্রধানমন্ত্রী যখন এই ধরনের বিতর্কে আহ্বান জানিয়েছেন, তখন ড. ইউনূস সেই বিতর্কে অংশগ্রহণ করছেন না কেন, তার দুর্বলতা কোথায়?
একাধিক সূত্র বলছে, বিভিন্ন সূত্র থেকে আন্তর্জাতিক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা ড. ইউনূসের মামলার নথিপত্র সংগ্রহ করেছেন এবং তারা মনে করছেন বিষয়টি আইনী। এটিকে রাজনৈতিক খাতে প্রবাহিত করা ঠিক হবে না। বিশেষ করে আয়কর সংক্রান্ত মামলাগুলোতে ড. ইউনূসের পক্ষে কেউই থাকতে চাইছেন না। সবকিছু মিলিয়ে ‘ফ্রেন্ডস অব ইউনূস’রা এখন নীরব হয়ে গেছেন। তারা আদালতের উপর সবকিছু ছেড়ে দিয়েছেন।
আর কোটি কোটি টাকা খরচ করে ড. ইউনূস তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য পত্রিকায় খবর প্রকাশ করছেন। কিন্তু সবকিছুই যেন বিফলে যাচ্ছে। ড. ইউনূস এখন কী করবেন সেটাই দেখার বিষয়।’