দেশে ফিরলেন ফখরুল: সোমবার নির্ধারিত হতে পারে নেতৃত্বের ভাগ্য’

নিজস্ব প্রতিবেদক: নিজের এবং স্ত্রীর চিকিৎসা শেষে আজ বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিটে ঢাকায় ফিরেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেশে ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন মহল। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ঘিরেই গত কয়েক বছর বিএনপির রাজনৈতিক কার্যক্রম আবর্তিত হচ্ছিল। ২৮ অক্টোবর থেকেই দলীয় কার্যক্রমে তিনি নেই। ঐ দিনের ঘটনার পর আইনশৃৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে এবং দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন মাস পর নির্বাচনের পরে তিনি মুক্তি পান। মুক্তির পর পরই চিকিৎসার জন্য বিদেশে চলে যান তিনি। এসময় গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে যে মির্জা ফখরুল আর নেতৃত্বে থাকতে চান না। মহাসচিবের দায়িত্ব তিনি পালন করতে চান না। এ ব্যাপারে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছে বলেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছিল।

তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার এই রকম গুঞ্জনকে একেবারে উড়িয়ে দেননি। তিনি এর রহস্যময় উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তিনি রাজনীতিতে আছেন এবং থাকবেন। রাজনীতিতে থাকা এবং নেতৃত্বে থাকা দু’টি ভিন্ন জিনিস।’

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার নিজের জন্য নয়, তার স্ত্রী এখন ক্যান্সারে আক্রান্ত। এরকম পরিস্থিতিতে তিনি বিএনপির মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করতে আগ্রহী নয়। নিজেও অসুস্থ। এই বার্তাটি তিনি দলের নেতৃত্বকে জানিয়েছেন এবং এ কারণেই তিনি মহাসচিবের পদ অন্য কাউকে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে এ মুহুর্তে বিএনপির মহাসচিব হওয়ার মতো কেউ নেই। যারা হওয়ার মতো আছেন তারাও এই সময় এই রকম দায়িত্ব গ্রহণ করতে আগ্রহী নয়। ফলে বিএনপির মহাসচিব নিয়ে তৈরী হয়েছে এক অস্বাভাবিক শূন্যতা।

অন্যদিকে, নির্বাচন পরবর্তী সময় আন্তর্জাতিক মহল এবং বিএনপির শুভাকাঙ্খীরা বিএনপিতে নেতৃত্ব পরিবর্তনের কথা বলছেন। বিশেষ করে লন্ডনে থেকে দল পরিচালনা করা এবং ভুল নীতি, ভুল কৌশলের মাধ্যমে দলের ব্যাপারে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত দেওয়ার বিষয়টি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচিত হয়েছে। তারেক জিয়ার নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তিনি দন্ডিত একজন ব্যক্তি হয়ে বিএনপির নেতৃত্বে থাকতে পারেন কিনা, সে প্রশ্নটিও সামনে এসেছে। এরকম পরিস্থিতিতে বিভিন্ন মহল থেকে কথা উঠেছিলো যে, যেহেতু তারেক জিয়া এখন দেশে অবস্থান করেন না, দেশের বাইরে অবস্থান করেন এবং যেহেতু তিনি একটি মামলায় দন্ডিত সেই জন্য আপাততঃ তিনি সংগঠনের কোন নির্বাহী দায়িত্বে যেন না থাকেন। নির্বাহী দায়িত্ব সার্বক্ষণিক দল পরিচালনা করছে এরকম কাউকে দায়িত্ব দিয়ে তিনি যেন অলঙ্কিত কোন পদ যেমন পৃষ্ঠপোষক কিংবা উপদেষ্টা গ্রহণ করেন।

এনিয়ে বিএনপিতে বেশ কয়েক দফা আলোচনাও হয়েছে। সে আলোচনায় এক পর্যায় তারেক জিয়াও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছিলেন। দলের স্বার্থে তিনি সবকিছু করতে প্রস্তুত আছেন এমন বার্তাও তিনি দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এজন্য আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দলের একটি কাউন্সিল অধিবেশন করার কথাও প্রাথমিকভাবে আলোচনা হয়েছে। কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতৃত্বে পরিবর্তনের বিষয়টি বিএনপিতে ভালোভাবেই আলোচিত হচ্ছে।’

এরকম বাস্তবতায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বা দলের চেয়ারম্যান জিয়া পরিবারের বাইরে কে হতে পারেন তা নিয়ে চলছে নানা মুখী আলোচনা। সে আলোচনাতেও সবচেয়ে বেশী উচ্চারিত হচ্ছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নাম। কারণ দীর্ঘদিন ধরে তিনি দলের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। দল পরিচালনার ক্ষেত্রে মূল চালিকাশক্তি তিনি। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার একটি গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে।’ পরিচিতি হয়েছে। দলের কর্মীদের কাছে একসময় প্রায় অগ্রহণযোগ্য এখন অনেকটাই গ্রহণযোগ্য এবং সহনীয়।

এরকম বাস্তবতায় বিএনপির অনেকেই মনে করছেন যে, জিয়া পরিবারের বাইরে যদি বিএনপির কোন নেতৃত্ব আসে সেটি অবশ্যই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসলে কি করবেন সেটির ব্যাপারে এখনও এক ধরনের অনিশ্চয়তা এবং ধোঁয়াচ্ছন্নতা রয়েছে। তিনি কি বিএনপির মহাসচিব থেকে সরে যাবেন? তিনি কি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন? নাকি দলের ভেতর কাউন্সিল পর্যন্ত তিন বর্তমান দায়িত্ব অব্যাহত রাখবে? এ বিষয়গুলোর চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে আগামী সোমবার অনুষ্ঠেয় দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে। ঐদিন সন্ধ্যায় লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও বৈঠকে যুক্ত হবেন। সেখানেই বিএনপির নেতৃত্বের কৌশল চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

কুমিল্লায় হিন্দু নারীকে ধর্ষণ ইস্যুতে জামায়াত আমিরের কঠোর বার্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার মুরাদনগরে ঘরে ঢুকে এক নারীকে গলায় ছুরি ধরে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হামলার চেষ্টা, অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। রাজ্যটির তিনজন মন্ত্রী ও ৬ জন বিধায়কের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এবার অশান্তির আঁচ

নির্দেশনা আসলে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত সেনাবাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে নির্দেশনা এলে সেনাবাহিনী অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন মিলিটারি অপারেশন পরিদপ্তরের স্টাফ

ওবায়দুল কাদেরের পিএস আব্দুল মতিন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আব্দুল মতিনকে (৫০) গ্রেপ্তার

‘হতাশ শোবিজের তারকারা’

নিজস্ব প্রতিবেদক: এবার এক ডজনেরও বেশি শোবিজের তারকা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তারা বেশ ঘটা করে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। হিসেব নিয়ে দেখা

কিট তৈরিতে পুকুর চুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহের কিট তৈরির প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল

বিজ্ঞাপনঃ

আরো খবর দেখুন

ভোপালে আবর্জনায় ভারতের জাতীয় পতাকা পোড়ানো, তদন্তে পুলিশ অনলাইন ডেস্ক: ভারতের মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালে আবর্জনার স্তূপে জাতীয় পতাকা পোড়ানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে শনিবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, শহরের একটি নির্ধারিত আবর্জনা ফেলার স্থানে কয়েকটি জাতীয় পতাকা (তেরঙ্গা) পুড়ছে। ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ার পর রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস ও বিজেপি—উভয় প্রধান রাজনৈতিক দল। কংগ্রেসের মুখপাত্র বিবেক ত্রিপাঠীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এবং বিজেপির করপোরেটর সুষমা ববিশা শাহপুরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, পৌর সংস্থার কর্মীদের অবহেলার কারণেই এই লজ্জাজনক ঘটনা ঘটেছে। বিবেক ত্রিপাঠী জানান, ওয়ার্ড ৫০-এর পৌর অফিসসংলগ্ন একটি নির্দিষ্ট স্থানে নিয়মিতভাবে আবর্জনা পোড়ানো হয়। সেখানেই জাতীয় পতাকা পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। শাহপুরা থানার উপপরিদর্শক হরিশ গুজারবোস জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দায়ীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এখন পর্যন্ত জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনায় দুটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পতাকা পোড়ানোর এই ঘটনা কেন্দ্র ও রাজ্য প্রশাসনের নজরেও এসেছে। ভারতের জাতীয় পতাকা আইন অনুযায়ী, পতাকা অবমাননা গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত, যার জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা রয়েছে।