
জেমস আব্দুর রহিম রানা: যশোরে ব্যবসার টাকা চুরির অভিযোগ তুলে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিএনপি নেতা মুল্লুক চাঁদ ও তার ভাই সঞ্জয় চৌধুরী। আজ সোমবার (২৫ মার্চ) ভোর রাতে যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ায় একটি চালের আড়তের মধ্যে থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। আড়ত মালিক রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ যশোর নগর বিএনপির সভাপতি ও সঞ্জয় চৌধুরী শহরের কাপুড়িয়া পট্টি রোডের চৌধুরী গোল্ড জুয়েলার্সের মালিক।
নিহত বাইজিদ হাসান খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার বানরগাতি এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে।
নিহতের স্ত্রী তাকিয়া তুছ সাদিয়া জানান, নিহত যুবক বাইজিদ হাসান যশোর শহরের চৌধুরী গোল্ড জুয়েলার্সের অধিনস্থ চৌধুরী কনস্ট্রাকশনের ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি সঞ্জয় চৌধুরী নিহত বায়েজিদের বিরুদ্ধে পাঁচ লাখ টাকা চুরির অভিযোগ তোলেন। এতে তিনি ছুটি নিয়ে খুলনায় চলে যান। এই টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে গতকাল বিকেলে যশোর নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ ও শহরের কাপুড়িয়া পট্টি রোডের চৌধুরী গোল্ড জুয়েলার্সের মালিক সঞ্জয় চৌধুরীসহ ৫/৬ জন লোক বায়েজিদকে খুলনা থেকে যশোরে ডেকে এনে মারপিট করে এবং মুল্লুক চাঁদের চালের আড়তের গোডাউনের ভিতরেই তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে রাত ১১টার দিকে তার বাড়িতে ফোন দিয়ে ৫ লাখ টাকা আনতে বলা হয় অন্যথায় তার লাশ পাওয়া যাবে বলে হুমকি দেয়া হয়।
এরপর রাত ৩টার দিকে খবর পাওয়া যায় মুল্লুক চাঁদের চালের আড়তের গোডাউনের ভিতরে অজ্ঞাত একটি লাশ পাওয়া গেছে।
এখবর প্রচারের পরই লাপাত্তা হয়ে যান যশোর নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ ও শহরের কাপুড়িয়া পট্টি রোডের চৌধুরী গোল্ড জুয়েলার্সের মালিক সঞ্জয় চৌধুরী।
খবর পেয়ে রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) জুয়েল ইমরান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বায়োজিতকে পিটিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে মুল্লুক চাঁদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। সে পাওনা টাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। কিন্তু হত্যা কে বা কারা করেছে সে বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। এছাড়া মুল্লুক চাঁদ যশোরের বাইরে রয়েছে বলে জানিয়েছেন। এ ঘটনার নেপথ্যের কাহিনী খুঁজতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে।
কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বায়োজিদ নামে এক যুবককে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আড়তের নাইটগার্ডকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। লাশ উদ্ধার করে যশোর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।