নিজস্ব প্রতিবেদক: সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের ৮২টি ব্যাংক হিসাবে গত ১২ বছরে ১৩৮ কোটি টাকা লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ। অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে এই কর্মকর্তার ৭টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ৩০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা জব্দ করেছে সংস্থাটি।
অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম বর্তমানে মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সড়ক অংশের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, এসব লেনদেনের কিছুই জানেন না।
বিএফআইইউ’র প্রতিবেদন বলছে, ২০১৫ সালে প্রকল্প পরিচালক হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তার নামে বেতন ভাতা বাবদ জমা হয়েছে ৯৮ লাখ টাকা। অথচ, তার ৭৭টি এফডিআরসহ মোট ৮২ ব্যাংক হিসাবে লেনদেন হয়েছে ১৩৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
ব্যাংক হিসাবে দেখা যায়, ২০১২-২০২৪ সাল পর্যন্ত হিসাবগুলোতে ৮৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা জমা এবং ৫৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা তোলা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের ৭ অ্যাকাউন্টে সবশেষ জমা আছে ৩০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। অথচ মো: জাহাঙ্গীর আলমের আয়কর বিবরণীতে গত অর্থবছরের নিট সম্পদ ৪ কোটি ১০ লাখ এবং আয় মাত্র ৩২লাখ ১৭ হাজার ৭২৪ টাকা দেখানো হয়েছে।’
এদিকে জাহাঙ্গীরের স্ত্রী ও সন্তানদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের অনুসন্ধান চলছে বলে বিএফআইইউ’র প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।’
অবশ্য প্রতিবেদনটি সত্য নয় বলে দাবি করেছেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কিছু থাকে, কিছু নাই। এগুলো হয়ত কিছু মিস ইন্টারপ্রেট হয়েছে। যেটা বললেন, আমি তো চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যেতাম, এতো টাকা হলে।’
একজন সরকারি কর্মকর্তার ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে এত বিপুল অংকের লেনদেনকে বিস্ময়কর বলছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এতগুলো টাকা, অস্বাভাবিক টাকা, এটা হওয়ার কথা নয়। এখন এটা কীভাবে হলো, তিনি কীভাবে রোজগার করলেন, অথবা এই টাকাটার উৎস কি, বিএফআইইউ নিশ্চই দেখছে এটা এখন। বিএফআইইউ যখন জব্দ করেছে, তখন ধরেই নিতে হবে এটা সাসপিসাস ট্রানজেকশন।’
উল্লেখ্য, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা মো: জাহাঙ্গীর আলম বিভিন্ন সময়ে ঠাকুরগাঁও, গোপালগঞ্জ ও রাজশাহীতে কর্মরত ছিলেন।’