নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ৭ জানুয়ারি। জাতীয় সংসদের পূর্ণতা পেতে আরও ৫০ টি সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে আগামী মাসে। সংবিধান অনুযায়ী ৫০ জন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হবেন। এই নির্বাচন প্রক্রিয়া হয় সংসদে যারা সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের ভোটে। সংবিধান অনুযায়ী যে রাজনৈতিক দল যত আসন পেয়েছেন, সেই আসন অনুযায়ী সামানুপািতক হারে নারী সংসদ সদস্য চূড়ান্ত করা হয়। সে হিসাবে এ বার সংসদ সদস্য হিসেবে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিতে পারবেন ৩৭ জন সংসদ সদস্য। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি পাবে দুটি। স্বতন্ত্ররা ১১ জন নারী সংসদ সদস্য মনোনয়ন দিতে পারবেন। আর এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য আগে নির্বাচন কমিশনকে একটি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানাচ্ছে, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের জন্য নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। তফসিলের পরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হবে আগ্রহীদের জন্য।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, স্বতন্ত্রদের জন্য ১১টি আসন বরাদ্দ থাকলেও স্বতন্ত্র হিসাবে কারা নির্বাচিত হবেন সেটাও চূড়ান্ত করবে আসলে আওয়ামী লীগ। কারণ এবার যারা স্বতন্ত্র নির্বাচিত হয়েছেন তারা প্রায় সকলেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা।আর সেই বিবেচনা থেকে ৪৮ টি সংরক্ষিত আসনে এবার নির্বাচিত করবে আওয়ামী লীগ। এটির প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে’।
আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সংরক্ষিত কোটায় নারী সংসদ সদস্য নির্বাচনের প্রাথমিক কাজ আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে শুরু করেছে। এ ব্যাপারে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকাও প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এই সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাজনীতিবিদ ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ব্যক্তিত্বদেরকেও রাখা হয়েছে। তবে এই সংক্ষিপ্ত তালিকায় যারা আছেন, তাদের ব্যাপারে আরও তথ্য সংগ্রহ এবং যাচাই বাছাইয়ের জন্য অন্তত তিনশ জন নারী সংসদ সদস্যের ব্যাপারে গোয়েন্দারা তথ্য সংগ্রহ করছেন। এই সমস্ত তথ্যগুলো আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করা হবে।
যে সমস্ত বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে তাদের অতীত রাজনৈতিক রাজনৈতিক ভূমিকা। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের ভূমিকা, তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ভূমিকা ইত্যাদি। এই সমস্ত তথ্যের ভিত্তিতে যারা সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন, তাদের মনোনয়নের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে বলে জানা গেছে। তবে ইতোমধ্যে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তারা দেন দরবার এবং দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।’
তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সংরক্ষিত কোটায় যারা নারী সংসদ সদস্য হবে তাদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই। তবে আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ স্থানীয় নেতা বলেছেন, মনোনয়নের জন্য যারা আগ্রহ প্রকাশ করে মনোনয়ন ফরম কিনবেন এবং জমা দিবেন তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। তবে এবার সংরক্ষিত আসনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে গোয়েন্দা তথ্য যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে সেটি মোটামুটি নিশ্চিত।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলছেন, শুধু এবার নয়, প্রতিবারই নারী সংরক্ষিত আসনে মনোনয়নের আগে এ ধরনের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা হয় এবং তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড যাচাই বাছাই করে দেখা হয় যে, তারা দলের জন্য এবং দেশের জন্য কি অবদান রেখেছেন।’