জেমস আব্দুর রহিম রানা: যশোরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান চলছে। স্বাস্থ্য বিভাগ ও ভ্রাম্যমাণ আদালত গত চারদিনে অভিযান চালিয়ে ১১ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক বন্ধ করে দিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে।
এমন একটি ক্লিনিক গড়ে উঠেছে শহরের পালবাড়ি মোড়ে। নাম হাসিনা ক্লিনিক। এখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত দেখতে পায় ভুয়া ল্যাব টেকনিশিয়ান দিয়ে রোগীদের প্যাথলজির পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট দেয়া হচ্ছে। পরীক্ষা নিরীক্ষার নামে মানুষকে বোকা বানিয়ে হাজার হাজার টাকা লুফে নেয়া হচ্ছে। ১৮ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) অভিযানের সময় আদালতের সদস্যরা দেখতে পান জরুরি বিভাগে কোন চিকিৎসক নেই। অপারেশন থিয়েটারের ইনচার্জ র্ছিলেন অনুপস্থিত। সেখানকার পরিবেশ একদম নোংরা। রোগীর অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত হ্যাক্সিসলের মুখ খোলা অবস্থায় রয়েছে। যে কারণে অপারেশন থিয়েটার ও প্যাথলজি বিভাগ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এছাড়া হাসিনা ক্লিনিকের মালিক ডা.মেজবাউর রহমানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন অফিস জানিয়েছে, নানা অনিয়মের অভিযোগে গত ৪ দিনের যশোর জেলার অন্তত ১১টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করা হলো।
হাসিনা ক্লিনিক ছাড়াও অন্য বন্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো হলো যশোর শহরের আধুনিক হসপিটাল, ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের ল্যাবজোন হসপিটালের অপারেশন থিয়েটার, খাজুরার মা জেনারেল হাসপাতাল, চৌগাছা উপজেলার মধুমতি প্রাইভেট হসপিটাল, নোভা এইড, ঝিকরগাছা উপজেলার সালমা মেডিকেল সেন্টার, সালেহা ক্লিনিক, মণিরামপুরের কেসি সার্জিক্যাল এন্ড শিশু প্রাইভেট হসপিটাল, রাজগঞ্জ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পারবাজার সার্জিক্যাল ক্লিনিক, বাঘারপাড়া উপজেলার আনোয়ারা ক্লিনিক। চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম, লাইসেন্সবিহীন হসপিটাল পরিচালনা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে এগুলো বন্ধ ঘোষণা করে।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, যশোরের বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি বিরোধী অভিযান শুরু হয়েছে। সরকারি নিয়মনীতি না মেনে কোন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে রোগীদের অস্ত্রোপচার, চিকিৎসাসেবা প্রদান ও প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষাসহ কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেয়া হবে না। অনিবন্ধিত ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল বন্ধ করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা রয়েছে। ফলে অবৈধ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, সিভিল সার্জন অফিসের হিসাবমতে যশোর জেলায় মোট ৩০০ টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। যার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে হালনাগাদ লাইসেন্স নেই। কাগজপত্র বিহীন এসব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার নামে রীতিমতো প্রতারণা চলছে।