ভারতের বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্ট লাউডস্পিকারে আজান দেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আদালতের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মসজিদে কেবলমাত্র একজন মুয়াজ্জিন খালি গলায় আজান দিতে পারবেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টিভির অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (১৫ মে) আযান সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলার রায়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শশীকান্ত গুপ্তা ও অজিত কুমারের সমন্বিত বেঞ্চ করোনা ভাইরাসের কারণে চলমান লকডাউনের মধ্যে মসজিদে লাউডস্পিকারে আজানে নিষেধাজ্ঞা দেন।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া যদি কেউ মাইকে আজান দেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রায়ে সমন্বিত বেঞ্চ বলেন, আমাদের মতে আযান ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য অঙ্গ। কিন্তু, লাউডস্পিকার ও অন্যান্য যন্ত্রের সাহায্যে আজান দেয়া কখনো ধর্মের অখণ্ড অংশ হতে পারে না।
মাইকে আজান দিতে না দেয়ার বিষয়টি সংবিধানে বর্ণিত ২৫ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করে না বলেও উল্লেখ করেন আদালত।
বলা হয়, সংবিধানে পরিষ্কার বলা হয়েছে- যতক্ষণ না কারও সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে ততক্ষণ অন্য একজন নাগরিক তার ভাল লাগছে না এরকম কিছু শুনতে বাধ্য নন। বরং যদি তাকে ওই কাজ করতে বাধ্য হতে হয় তাহলে তা আইনবিরোধী।
আদালত বলেছেন, শব্দদূষণমুক্ত ঘুমের অধিকার জীবনের মৌলিক অধিকারের অংশ। মানুষের কণ্ঠে মসজিদ থেকে আযান দেয়া যায়। কারোরই নিজের মৌলিক অধিকারের জন্য অন্যের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করার অধিকার নেই।
কিন্তু অন্যান্য কোনো মসজিদে আযান বা মন্দিরে রামায়ন পাঠ বা কীর্তন অথবা মঞ্চে কাওয়ালি অনুষ্ঠানে মাইক ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে না, এটা বলা হয়নি।
গত এপ্রিল মাসে লাউডস্পিকারে আযান ইস্যুতে এলাহাবাদ হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন বিএসপি নেতা আফজাল আনসারি। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাউডস্পিকারে আজান দেয়ার বিষয়ে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল তা তুলে নেয়ার আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার ওই আবেদন খারিজ করে লাউডস্পিকারে আন দেয়া বন্ধ রাখতে বলেন আদালত।