জেমস আব্দুর রহিম রানা: যশোরের ঝিকরগাছায় মামা ও ভাগ্নের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার নির্বাসখোলা ইউনিয়নের বল্লা কলোনীপাড়া গ্রামে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। নিহত দু’জন হলো আল মামুন (২২) ও আবু মুসা (২৫)। তারা দুজনে সম্পর্কে মামা ভাগ্নে। নিহত মামুন বল্লা কলোনীপাড়ায় বোনজামাই আজহারুল ইসলামের বাড়িতে থাকতেন। আরেকজন নিহত আবু মুসা আজহারুলের আপন ভাতিজা। তবে এই দুইজনের মৃত্যুর ঘটনায় ভিন্ন ভিন্ন কথা শোনা যাচ্ছে। নিহত মামুনের স্ত্রী দাবি করছে পরকীয়া প্রেমের জেরে হুমকি ধামকিতে তার স্বামী আত্মহত্যা করেছে। আর নিহত মুসার মা দাবি করেছে মামুনের মৃত্যু সইতে না পেরে তার ছেলে মুসা আত্মহত্যা করেছে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার দুপুরে বল্লা গ্রামের কপোতাক্ষ নদের ভেঁড়িবাঁধের পাশে একটি কাঁঠাল গাছের মগডাল থেকে আল মামুন (২২) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই লাশ উদ্ধারের পরই মামুনের ভাগনে (বোন জামাইয়ের ভাতিজা) মুসা কীটনাশক পান করে। পরে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা নেয়ার পথে সে মারা যায়। মামুন গত রোববার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়, তার ঘরে নববধু ছিল। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাকে দাফন করা হয়েছে। এদিকে বিয়ের মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় নববধূ রেখে মুসার আত্মহত্যার ঘটনায় নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। নিহত আল মামুনের স্ত্রী বলেন, মঙ্গলবার সকালে মুসার পরিবারের লোকজন মামুনকে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে বাগানের মধ্যে গোপনে কথা বলে। বিষয়টি নিয়ে মুসা জানায়, সোমবার রাতে তার ভাগ্নির সাথে রাত কাটিয়েছে মামুন। সেবিষয়েই তারা কথা বলেছে। নিহত মামুনের স্ত্রী আরো জানান, এমন ঘটনার কারণে তারা সপরিবারে ঢাকা চলে যেতে চেয়েছিল। যাতায়াত খরচের জন্য বাপের বাড়ি টাকা আনতে গেলে সেখানে গিয়ে জানতে পারেন তার স্বামী মারা গেছে। এদিকে পরকীয়ার বিষয় কিংবা নিহত মামুনকে হুমকি ধামকি দেয়ার বিষয়টা অস্বীকার করেছেন নিহত মুসার মা। তিনি জানান, মামুন আর মুসা একসাথে থাকতো সবসময়। মামুনের ঝুলন্ত লাশ দেখে নিজেকে সামলাতে পারেনি মুসা। দোকান থেকে কীটনাশক কিনে সেটা পান করে আত্মহত্যা করেছে সে। ঝিকরগাছা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, মঙ্গলবার দুপুরে আল মামুনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার পরিবারের কাছে সেই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।