আপনার জানার ও বিনোদনের ঠিকানা

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সিরাজগঞ্জে বাড়ছে সব নদ-নদীর পানি

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়তে শুরু করেছে অভ্যন্তরীণ ফুলজোড়, করতোয়া, বড়াল ও হুড়া সাগর নদীর পানিও। এতে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীপাড়ের মানুষদের।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহজাদপুর উপজেলার খুকনি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম ও আরকান্দির অন্তত ১৫ বাড়ি-ঘর নদীর পানি প্রবেশ করেছে। এসব বাড়ি-ঘরের মানুষ চৌকি উচু করে কমলমতি শিশুদের নিয়ে অতিকষ্টে বসবাস করছে। এছাড়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের অধিকাংশ নিচু গ্রাম এখন বন্যার পানিতে ভাসছে। অনেক রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে। একই সঙ্গে যমুনায় পানি বাড়ার ফলে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে যেতে শুরু করেছে চরাঞ্চলের ফসলি জমিও।’

রোববার (২৭ আগস্ট) সকালে সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৬১ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে এই নদীর পানি বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (বিপৎসীমা-১২ দশমিক ৯০ মিটার)। অপরদিকে, কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৩৭ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ২৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা-১৪.৮০ মিটার)

কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়া মুন্সী জানান, যমুনার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চরাঞ্চলের নিম্নভূমি তলিয়ে যাচ্ছে। বসতবাড়িতেও পানি উঠতে শুরু করেছে। গত কয়েকদিন ধরে কাওয়াকোলা ইউনিয়নের হাটবয়রা, ছোট কয়রা, দোগাছি ও কাওয়াকোলা গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে এসব অঞ্চলের শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।’

শাহজাদপুর উপজেলার খুকনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুল্লুক চাঁন জানান, বন্যা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে তার ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম ও আরকান্দি গ্রামে ব্যাপক নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। গত ২ মাসে অন্তত শতাধিক বাড়িঘর যমুনায় বিলিন হয়ে গেছে। অসহায় জীবন যাপন করছেন ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষরা। এছাড়া অন্তত ১৫ বাড়িঘর বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় এসব বাড়িঘরের মানুষ চৌকি উচু করে বসবাস করছেন।’

কৈজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন খোকন জানান, যমুনার ভাঙনে ইটপাচিল গ্রামের ২ শতাধিক মানুষ নিঃস্ব হয়েছেন। এদের অনেকে পলিথিনের ঝুপড়ি তুলে বাস করছেন। তারা রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। নিচু বাড়ি-ঘরে বন্যার পানি উঠতে শুরু করায় চরাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদে স্থানে চলে যেতে বলেছি।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, উজানে ও দেশের অভ্যন্তরে ভারী বৃষ্টির কারণে যমুনায় পানি বাড়ছে। এতে চরাঞ্চলের নিম্নভূমিগুলো প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে’। আরও দুই থেকে তিনদিন পানি বাড়লেও বড় বন্যার আশঙ্কা নেই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই খবরও একই রকমের

ওদের ছিলো এন্ড্রু কিশোর আমাদের আছে মশিউর – কবির বিন সামাদ

হঠাৎ করেই রিং বেজে উঠলো। অপরিচিত নাম্বার তবে মালয়েশিয়ার নাম্বার হওয়ায় নিঃসংকোচে ফোনটা রিসিভ করলাম। ওপাশের কন্ঠ থেকে ভেসে এলো দাদু আমি মশিউর রহমান। আমি

কবিয়াল অমেদ আলি ‍সরদার : সাকিম গঙ্গানন্দপুর – সাইদ হাফিজ

‘গইলির ধারের ঘাস গত্তি খায় না’ বাঙালির আত্মান্ধত্ব সম্পর্কিত এ-ধরণের প্রবচনের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বিশেষ গবেষণার প্রয়োজন পড়ে কি? চর্যাপদ থেকে শুরু করে আজ অব্দি

[শিক্ষা মূলক গল্প] সেই দিন থেকে, কারো কথা কানে তুলি না – কবির বিন সামাদ

  হ্যা একটা গল্প পড়েছিলাম – এক ব্যক্তি নাকি তার বউ কে নিয়ে গাঁধার পিঠে চড়ে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে কিছু লোক তার সমালোচনা শুরু করলো এই

বেলকুচিতে ভূল সিজারে প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ

সেলিম রেজা সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে বিসমিল্লাহ আধুনিক হাসপাতালে ভূল সিজারে মরিয়ম খাতুন নামের এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার শেরনগর এলাকায় বিসমিল্লাহ

কুরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত – মিজানুল হক

আরবিতে কোরবানি শব্দের অর্থ নৈকট্য আর ফারসিতে শব্দটি ত্যাগ অর্থে ব্যবহার হয়।  ইসলামের ধর্মীয় পরিভাষায় কোরবানি বলতে ‘মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় নির্দিষ্ট শ্রেণির পশুগুলোর

উল্লাপাড়ায় পানিতে ডুবে দুই মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যু

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা ও সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের আলোকদিয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার দুপুরে ডোবার পানিতে ডুবে দুইমাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এরা হল, আবু শামীমের