
নিজস্ব প্রতিবেদক: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে জলমহাল থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা না পেয়ে ১০ লাখ টাকার মাছ লুটের অভিযোগ উঠেছে এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। সোমবার সকাল ৯টার দিকে ভুনবীর ইউনিয়নের শাসন লতুয়া খালকাটা বিলে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ২ নম্বর ভুনবীর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল আহাদসহ ১৫ জনকে আসামি করে রাত ১০টায় শ্রীমঙ্গল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সম্পাদক ও আলীসারকুলের বাসিন্দা সুজিত সরকার।
অভিযোগে বলা হয়েছে, যুবদল নেতা মো. আব্দুল আহাদ দীর্ঘদিন ধরে জলমহাল ইজারাদার সমিতির কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। সমিতি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ৩০ নভেম্বর রাত ১০ টায় আব্দুল আহাদ মাইকিং করে জলমহালের ইজারা ‘অবৈধ’ বলে প্রচার করেন। পরদিন ১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার নয়টায় আব্দুল আহাদের নেতৃত্বে শতাধিক লোক জলমহালে ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এতে সমিতির প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন। বাধা দিতে গেলে তাদের ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়। এসময় সেখানে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।,
খবর পেয়ে দুপুরে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন শ্রীমঙ্গল থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম ও পুলিশ ফোর্স নিয়ে লতুয়া বিল পরিদর্শন করেন।
সুজিত সরকার জানান, উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির নিকট থেকে সমিতির মাধ্যমে তারা তিন বছরের জন্য লতুয়া বিল লীজ নেন। আব্দুল আহাদ দীর্ঘদিন ধরে সমিতির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাদা দাবী করে আসছিলেন। এসময় তিনি নিজেকে মৌলভীবাজার ৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপি নেতা হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরীর লোক পরিচয় দিয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন।
সুজিদ বলেন, আব্দুল আহাদকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আহাদ হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরী তাকে বিল থেকে মাছ মেওে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানায়।
যোগাযোগ করলে যুবদল নেতা আ. আহাদ বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ইউএনও সাহেবের সামনের যে কতটা আসছে এই সেই ভিডিওটা আমি ফেসবুকে দিয়েছি আপনি দেখলে বুঝতে পারবেন উনার সাথে কি কথা হয়েছে। মৎস্যজীবীর পক্ষ থেকে যে অভিযোগ করেছেন উনি হলেন মৎস্যজীবীর একটি সমিতির সেক্রেটারি। ওনার একটা বিল আছে সমিতির নামে। সে বিলটা উনি চালান না একজন বাঙালি কে দিয়েছেন। ওই লোক এই অভিযোগটা উনাকে দিয়ে করিয়েছেন। আমাদের অভিযোগ ছিল হাওরে কোনো নেটের বেড়া থাকবে না। আমার এটার বিরুদ্ধে। মৎস্যজীবীরা কিছুদিন আগে মুজিব ভাইয়ের কাছে তাদের সমস্যা নিয়ে গিয়েছিল। যাওয়ার পর উনি ভূনবীর ইউনিয়নে আমাদের চারজনকে দায়িত্ব দিয়েছেন যে তাদের সমস্যা সমাধান করার জন্য। আমরা এটাই করেছি।,
জানতে চাইলে মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনের বিএনপি প্রার্থী মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজী মুজিব) বলেন, সে কোনো নাম ভাঙ্গায়নি। কয়েকদিন আগে ভূনবীরের কিছু লোক আসার কাছে আসছিলো তারা বলেছে যে হবিগঞ্জ থেকে লোক এসে পলো দিয়ে তাদের মাছ মেরে নিয়ে যায়। আমি বলেছি আমার দল ক্ষমতায় গেলে বাইরে থেকে কোনো লোক এসে এলাকার ক্ষতি করবে সেটা হতে দিবো না। কেউ যদি চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী করে থাকে সে আমার লোক না। আমি ওর সাথে নাই। প্রশাসন দেখবে। সে যদি আমাদের পক্ষ থেকে নেগেটিভ কিছু করে থাকে সে জেলে যাবে।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, মৎস্য কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ডকে বিষয়টি দেখার জন্য বলা হয়েছে। যুবদল নেতা আহাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে তা রেকর্ড করা হয়নি ফলে এনিয়ে কোন কিছু বলা যাচ্ছে না।,











