
নিজস্ব প্রতিবেদক; মানবিকতা ও নিঃস্বার্থ সমাজসেবার এক অনন্য উদাহরণ স্থাপন করে না-ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন কিশোরগঞ্জের ইটনার গোরখোদক মনু মিয়া। শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ইটনা উপজেলার জয়সিদ্দি ইউনিয়নের আলগা পাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে কবর খোঁড়ার কাজ শুরু করেন মনু মিয়া। এরপর প্রায় পাঁচ দশক ধরে একটানা ৩ হাজার ৫৭টি কবর খুঁড়েছেন নিজের হাতে। বিস্ময়কর হলেও সত্য, এসব কাজের জন্য কখনোই কোনো পারিশ্রমিক নেননি তিনি। মৃত্যুর পর মানুষের মর্যাদাপূর্ণ বিদায় নিশ্চিত করাকে তিনি দেখতেন আত্মিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা হিসেবে।
দূর-দূরান্তের মৃত্যু সংবাদ পেলেই প্রস্তুত হয়ে যেতেন কবর খুঁড়তে। যাতায়াতের সুবিধার্থে নিজের ধানিজমি বিক্রি করে কিনেছিলেন একটি ঘোড়া, যাতে যন্ত্রপাতি নিয়ে সময়মতো পৌঁছাতে পারেন মৃতের বাড়িতে। তাঁর হাতেই হাজারো মানুষ পেয়েছেন চিরনিদ্রার ঘর।
নিঃশব্দে সমাজের জন্য কাজ করে যাওয়া এই মানুষটি ছিলেন কোনো খ্যাতি বা পুরস্কারের বাইরে থাকা এক সত্যিকারের নায়ক। তাঁর মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে এলাকায়। স্থানীয়রা বলছেন, মনু মিয়ার মতো নিঃস্বার্থ মানুষ এ যুগে বিরল।
মাটি খুঁড়ে অন্যের শেষ ঠিকানা গড়া সেই মানুষটিই আজ নিজেই আশ্রয় নিলেন সেই চিরচেনা
মাটির বুকে।