নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক সাত মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সেনা কর্মকর্তা, বিচারপতি, সাবেক আইজিপি ও সচিবসহ ২২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধা সনদের বৈধতা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এদের মধ্যে রয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খান ও টিপু মুনশি এবং সাবেক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোজাম্মেল হোসেন।
এছাড়া আওয়ামী লীগের দুই সংসদ সদস্য, একজন সাবেক বিচারপতি, সাবেক সেনাপ্রধানের পাশাপাশি আইজিপি, সচিব, কর কমিশনার ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সাবেক পরিচালকের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।
তদন্তের অংশ হিসেবে আগামী ৭ জুলাই সকাল ১১টায় জামুকার সভাকক্ষে যথাযথ তথ্য-প্রমাণসহ উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে তাঁদের। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সনদ ও গেজেট বাতিলের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জামুকার মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন।
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে অভিযুক্তদের কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হয়েছে। জামুকার সহকারী পরিচালক আমির হামজার সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সমাজের সম্মানিত ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জানা গেছে, যাঁদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও গেজেটের নথিপত্র যাচাই করা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন—
তদন্তের অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর চার কর্মকর্তার মুক্তিযুদ্ধ-সম্পর্কিত তথ্য সেনা সদর দপ্তরের কেন্দ্রীয় রেকর্ড অফিস থেকে সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জানা যায়, ১৩ এপ্রিল জামুকার ৯৫তম সভায় এই ২২ ভিআইপির মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় নিয়ে বিতর্কের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন হয়। সেখানে তাঁদের আবেদনপত্র, তদন্ত প্রতিবেদন, সভার কার্যবিবরণী, গেজেট ও অন্যান্য নথি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত হয়।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর ১৯৮৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচবার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি হয়েছে। প্রথম তালিকায় ১ লাখ ২ হাজার ৪৫৮ জনের নাম ছিল। ১৯৯৮-২০০১ সালের সর্বশেষ তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫২ জনে।
জামুকা সূত্র বলছে, অতীতের নানা অনিয়মে বিতর্কিত অনেকের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন থাকায় সরকার এবার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে যাচাই-বাছাই শুরু করেছে। অভিযোগ সত্যি হলে কেবল সনদ বাতিল নয়, আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.