
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে হলেও বর্তমানে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে চরম টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। স্বামী পক্ষ সন্তানের স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে ভুক্তভোগী স্ত্রী তার শিশু সন্তানের স্বীকৃতি চাচ্ছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের ডালিম আলী ও জেসমিন বেগম দম্পত্তির ছেলে ইমাম হোসেন জিসান ও একই গ্রামের জাব্বারুল ইসলাম ও লাইলী বেগম দম্পত্তির মেয়ে জামিলা আক্তার। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কে ছিল। পারিবারিক অনিচ্ছার কারণে ২০২৩ সালের ৬ জুলাই তারা পালিয়ে রাজশাহী নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে ১ লাখ ৫০ হাজার ১ শত টাকা দেনমোহর ধার্য করে তন্মধ্যে ১০০ টাকা পরিশোধ করে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
কিন্তু ২০২৪ সালের ২৩ জুন হঠাৎ জামিলার বাড়িতে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে তালাকের নোটিশ আসে। অভিযোগকারী জামিলা জানান, তালাকের নোটিশ পাঠানো হলেও জিসান পরবর্তীতে তার সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক বজায় রাখেন এবং একসাথে রাত্রিযাপনও করেন। জামিলা বলেন, জিসান তাকে জানিয়েছে- “পারিবারিক চাপের কারণে তালাকের নোটিশ পাঠাতে সে বাধ্য হয়েছিল। জিসান তাকে আরও আশ্বস্ত করেছে যে, এসব কাগজের তার কাছে কোন মূল্য নেই। আমাকে নিয়ে প্রয়োজনে আবার পালিয়ে গিয়ে তারা বাইরে বসবাস করবেন। সে আমাকে কোনদিনই ছেড়ে দিবে না।” কিন্তু বর্তমানে জিসান সন্তানের স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। এমনকি জিসান দাবি করছে, সে নাকি আমাকে বিয়ে করে নি। আমার প্রশ্ন, “আমাদের যদি বিয়েই না হবে তাহলে তালাকের নোটিশ সে কিভাবে পাঠালো?”
এই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন জামিলা আক্তার। জিসান, জামিলা ও শিশু সন্তানের পারিবারিক ছবি দেখিয়ে জামিলা বলেন, “আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। জিসান একদিকে আমাকে বিয়ে করেছে, আবার এখন সে সবকিছু অস্বীকার করছে। শুনেছি এখন সে অন্যত্র বিয়েও করেছে। বর্তমানে আমাদের কন্যা সন্তানের বয়স ১৪ মাস। আমি এর সুষ্ঠ সমাধান করতঃ সন্তানের স্বীকৃতি চাই।”
সন্তানের স্বীকৃতি ও বিভিন্ন বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ইমাম হোসেন জিসানের সাথে গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে কথা বলতে চাইলে তিনি বাংলা এডিশনকে জানান, “যেহেতু আদালতে মামলা হয়েছে, সেহেতু আপনি সাংবাদিক হলেও আপনার এ বিষয়ে কোন কিছুই জানার অধিকার নেই।” এ কথা বলেই ফোন কেটে দেন।
উপরোক্ত বিষয়ে মোবারকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মাহামুদুল হক হায়দারী বলেন, “ঘটনার বিষয়ে আমি আবগত আছি। শুনেছি সন্তানের স্বীকৃতির বিষয়ে জামিলা আক্তার বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে। তাই উক্ত বিষয়ে আমার কোন কিছুই করার নেই।”
ঘটনার বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, “ছেলের পরিবারের অবস্থা মেয়ের পরিবার থেকে স্বচ্ছল। যার কারণে এমন জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে একটি নিরপরাধ শিশুর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় ফেলে দেওয়া কোনভাবেই উচিত হবে না।”
এমন পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী জামিলা আক্তার শিশু সন্তানের স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই ইমাম হোসেন জিসানকে বিবাদী করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।