নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রায় ১ হাজার ৩১৪ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম, অর্থ পাচার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যানের কাছে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
দুদকের পাঠানো চিঠিতে কর্ণফুলী নদী ড্রেজিংসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অনুমোদনপত্র, অর্থ বরাদ্দের দলিল, দরপত্র আহ্বানের বিজ্ঞপ্তি, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন, কার্যাদেশ, চুক্তিপত্র, প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি, বিল-ভাউচারসহ সংশ্লিষ্ট সব আর্থিক কাগজপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও বন্দর চেয়ারম্যানের স্ত্রী আইরিন জামান এবং দুই সন্তান মুহতাসিম ইয়াসার ও সারান ইয়াসারের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট ও জন্মনিবন্ধনের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একটি সূত্র জানায়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চিঠি দেওয়ার পর থেকে অভিযোগের বিষয়বস্তু গোপন রাখতে বন্দর চেয়ারম্যান ইতোমধ্যে একটি প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) দপ্তরের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম বন্দরে ৭২টি অনিয়ম শনাক্ত করা হয়েছে, যার আর্থিক পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪৪টি অনিয়মের আর্থিক মূল্য প্রায় ২৬৫ কোটি টাকা বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিহ্নিত অনিয়মগুলোর অধিকাংশই দরপত্র প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, মূল্যায়নে পক্ষপাতিত্ব এবং চুক্তি বাস্তবায়নের ধাপে দুর্নীতির মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে। এসব গুরুতর অভিযোগের প্রেক্ষিতেই অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা মিললে পরবর্তী ধাপে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করা হবে এবং প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.