
অনলাইন ডেস্ক: অবরুদ্ধ গাজার শিশু আমির। ক্ষুধার্ত পরিবারের মুখে সামান্য খাবার তুলে দিতে পায়ে হেঁটে ১২ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছিল সে। হয়তো আশা ছিল, কিছু খাবার নিয়েই ফিরে যাবে মায়ের কোলে। কিন্তু দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে থেমে গেল তার ছোট্ট জীবন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় জানা যায়, আমির ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে পৌঁছে সামান্য কিছু খাবার সংগ্রহ করে ধন্যবাদ জানায় স্বেচ্ছাসেবকদের। এরপর খাবারগুলো হাতে নিয়ে ফিরে যেতে চাইলে ইসরাইলি বাহিনী সেখানে হামলা চালায়। গুলিবর্ষণ, মরিচের গুঁড়া, কাঁদানে গ্যাস ও স্টান গ্রেনেডে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রটি মুহূর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ভীত-সন্ত্রস্ত আমির দৌড়াতে গেলে গুলিতে লুটিয়ে পড়ে।
ঘটনার বর্ণনায় উঠে এসেছে মার্কিন সেনাবাহিনীর বিশেষ শাখার সাবেক কর্মকর্তা আগুইলারের সাক্ষ্য। তিনি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল-সমর্থিত বিতর্কিত সংস্থা ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
আগুইলার বলেন, ‘ছোট্ট আমির খালি পায়ে, ছেঁড়া জামা পরে আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। হাড্ডিসার শরীর, ময়লা হাতে সে আমাকে স্পর্শ করে চুমু দেয় এবং ইংরেজিতে বলে—“থ্যাংক ইউ”। খাবারগুলো সে মাটিতে রেখে আমাকে কৃতজ্ঞতা জানায়, তারপর ফিরে যেতে চায় তার দলের কাছে।’
কিন্তু সেই ফিরে যাওয়া আর সম্ভব হয়নি। আগুইলার জানান, ‘ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে ইসরাইলি বাহিনী হঠাৎ আক্রমণ শুরু করে। আমিরের দিকে মরিচের গুঁড়া, কাঁদানে গ্যাস, স্টান গ্রেনেড ছোড়া হয়। দৌড় দেওয়ার সময়ই গুলিবিদ্ধ হয় সে। একে একে আরও অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।’
এই ঘটনা বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছে। শিশুদের জীবন নিয়ে এমন নিষ্ঠুরতা গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মাঝে। অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।