
অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ নিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এই রায়কে স্বাগত জানালেও অনেকে এর বিরোধিতাও করেছেন।
পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রটেকশন অব ডেমোক্র্যাটিক রাইটসের (এপিডিআর) সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত সুর বলেন, আমরা যেকোনো মৃত্যুদণ্ডের বিরোধী। ফলে শেখ হাসিনাকেও যেভাবে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে, তা আমরা সমর্থন করতে পারছি না। তবে হাসিনার শাসনকালে যেভাবে বাংলাদেশজুড়ে লুটের রাজত্ব, খুন, সন্ত্রাস, গুম হয়েছে, সর্বোপরি জুলাই বিপ্লবে তার বিরুদ্ধে যে গণহত্যার অভিযোগ উঠেছে বা মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে, তার প্রেক্ষিতে যে মামলা ও বিচার হয়েছে, তাতে কঠিন ও কঠোর সাজা হওয়া অনিবার্য ছিল এবং সেটাই হয়েছে। সেদিক থেকে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু বাংলাদেশে ভোটের দিকে তাকিয়ে তাড়াহুড়ো করে যেভাবে একটি অন্তর্বর্তী সরকার তার সাজা ঘোষণা করলো তাতে বাইরের দুনিয়ার কাছে এই সাজা কতটা গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে গেলো।
আইনজীবী মোহাম্মদ এ জামান বলেন, যেকোনো দেশের প্রধানমন্ত্রীর একটা গুরুদায়িত্ব থাকে গোটা দেশকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনা করার। সেক্ষেত্রে গত বছরের জুলাই আগস্ট মাসে বাংলাদেশে যে গণহত্যা হয়েছে, তাতে হাসিনার ভূমিকা কোনো অবস্থাতেই আমরা মেনে নিতে পারিনি। সেদিন যদি হাসিনা নীরব না থেকে কিংবা উসকানিমূলক বক্তব্য না রেখে পদক্ষেপ নিতেন, তবে বাংলাদেশের সেইসব তরতাজা মানুষগুলো প্রাণ হারাতো না। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হাসিনার একটা দায়ভার রয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী সেদিন একটা সুষ্ঠু সমাধান করতে পারতেন, কিন্তু তা না করে কেবল নিজের গদি বাঁচানোর জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য রেখেছিলেন। এমনকি তিনি সেদিন তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের রবার বুলেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলতে পারতেন। কিন্তু সেটা না করার ফলে গুলিবিদ্ধ হয়ে অনেক তাজা প্রাণ হারিয়ে গিয়েছিল। ফলে এই ঘটনায় শেখ হাসিনাকে কোনোভাবেই ক্ষমা করা যায় না। তাছাড়া আমরা সবাই আইনের কাছে সমান।
তবে পশ্চিমবঙ্গের সাবেক সিপিআইএম সংসদ সদ্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, স্বাভাবিকভাবে মানবাধিকারের বিবেচনায় বর্তমান দুনিয়াতে মৃত্যুদণ্ড চলে না। তাছাড়া প্রতিহিংসার মনোভাব নিয়ে চললে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হতে পারে। বাংলাদেশের মানুষ তা পছন্দ করবে না। সব মিলিয়ে এই ঘটনা বাংলাদেশ এবং ভারত উপমহাদেশে একটা গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।,











