হাসিনার কাঁধে বন্দুক রেখে নিজেদের কথাই বলিয়ে নিতে চাইছে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন। গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার।

হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দেশে ঘটে চলেছে একের পর এক ঘটনা। সবশেষে সবচেয়ে যে বিষয়টি আলোচনা আসে তা হলো ইসকন ও চিন্ময় দাস। এ ইস্যুকে কেন্দ্র করে করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম খবর প্রকাশ করতে থাকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এ কারণে অনেকে পালিয়ে ভারতে চলে আসছেন। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে প্রবেশকারীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়েনি বলে নিশ্চিত করেছে ভারতেরই প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু। রোববার গত ছয় বছরের সরকারি তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে করা ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। এদিকে গত ৫ আগস্ট থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখান থেকে একের পর এক বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন।

বিবৃতি প্রসঙ্গে কথা বলেছেন নিউজ টাইমের বর্ষীয়ান সাংবাদিক দীনেশ কে ভোরা। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, অন্য দেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা এক ব্যক্তি কীভাবে বিবৃতি দিতে পারেন’? আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, যখন কোনো ব্যক্তি একটি দেশে কূটনৈতিক আশ্রয় নিয়ে থাকে তখন তিনি বিবৃতি দিতে পারেন না। কিন্তু শেখ হাসিনা সেই নিয়মের উলঙ্ঘন করেছেন। ভোরার মতে, শেখ হাসিনা যা বলছেন, তা আসলে মোদি সরকারের শিখিয়ে দেওয়া বুলি। মোদি সরকার আসলে শেখ হাসিনার কাঁধে বন্দুক রেখে নিজেদের কথাই বলিয়ে নিতে চাইছে হাসিনাকে দিয়ে।

ভোরার মতে, এই প্রবণতা আসলে আগুন নিয়ে খেলার সমান, আত্মঘাতী পদক্ষেপের সঙ্গে তুলনীয়। এর আগে নেপালের সঙ্গেও এমন আচরণ করেছে ভারতের মোদি সরকার। নেপালের সংবিধানে নাক গলিয়ে পার্বত্য রাষ্ট্রের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে ভারত। অখণ্ড নেপালের মানচিত্রে সংসদে দেখিয়ে বিতর্ক তৈরি করে দেশটি। যদিও নেপাল সরকার ভারতকে বেশিদূর এগোনোর সুযোগ দেয়নি। প্রতিক্রিয়ায় ভারত নেপালে প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো বন্ধ করে দেয়। যদিও আজ পর্যন্ত ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেকথা স্বীকার করেনি। সেদিন থেকে নেপালের মানুষ ভারতকে ঘৃণা করে। এমনকি নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলিও চীনপন্থি। তাই ভারতের পদক্ষেপ বুমেরাং প্রমাণিত হয়েছে।’

এর থেকেও বড় ভুল এখন বাংলাদেশের সঙ্গে করছে ভারত, শেখ হাসিনাকে মোহরা বানিয়ে। বাংলাদেশ বার বার ভারতকে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার পরামর্শ দিচ্ছে, কিন্তু ভারত সে কথা কানে তুলছে না। সম্প্রতি বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিয়ে আরও জলঘোলা হচ্ছে। বাংলাদেশের ইসকন মন্দির থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস আর তাদের সদস্য নয়। এদিকে ভারত শেখ হাসিনাকে এতটাই ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে যে তিনি সেদেশে বসে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে যাচ্ছেন। হাসিনাকে এখনই না থামালে দু দেশের সম্পর্ক আরো তলানিতে গিয়ে ঠেকবে বলে মনে করেন সাংবাদিক ভোরা। মালদ্বীপ, নেপাল ভুটানের মতো একই ভুল বাংলাদেশের সঙ্গে করছে ভারত। নিজেকে বিশ্বগুরু প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে আসলে আগুন নিয়ে খেলছে ভারতের মোদি সরকার।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে এনসিপি ও ছাত্রদের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক: পটিয়ায় শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার অভিযোগে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের আশায় জীবিত রাসেলস ভাইপার নিয়ে হাজির যুবক  

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ কয়েকদিন আগে ঘোষণা দেন, সুরক্ষিত পোশাক পরিধান করে কেউ যদি জীবন্ত রাসেলস ভাইপার সাপ ধরে

উত্তরা থেকে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর উত্তরা থেকে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সোমবার (১৮ নভেম্বর)।

অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ঘোষণা আওয়ামী লীগের

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ শীঘ্রই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা করছে। গত শুক্রবার (২৫ অক্টোবর)। ভয়েস অব আমেরিকাকে

বাঁশখালীর সরল ইউপির বিতর্কিত সচিব হারুন রশীদের বদলী

বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নাগরিক (বয়স্ক পুরুষ-মহিলা) থেকে বয়স্ক ভাতার কার্ড দেওয়ার নাম করে বড় অংকের টাকা নেওয়া, ইজিপিপি শ্রমিকদের

দ্বন্দ্ব উসকে দেয়ার চেষ্টায় আওয়ামী লীগ

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনার সরকারের। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে দলটি ইতিহাসের স্মরণকালের মহাবিপর্যয়ের মুখে পড়ে।