নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদগুলোতে নির্বাচন আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার বিভাগ। আর তাতে ডাকসু নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৯ সেপ্টেম্বরে ভোট আয়োজনে এখন পর্যন্ত আর কোনও বাধা রইলো না।
এর আগে, ডাকসু নির্বাচনের ওপর আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি কোন প্রক্রিয়ায় ডাকসু নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন, বাছাই ও চূড়ান্ত করা হচ্ছে এবং ভোটের প্রস্তুতির প্রক্রিয়া কী—সেইসব বিষয়েও জানতে চান আদালত।
এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি এস কে তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছিলেন।
তবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবীরা হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বারে আদালতে গেলে ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই নির্বাচন স্থগিত করার আদেশটি আটকে গেলো।
হাইকোর্টের আদেশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও প্রার্থীদেরকে এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে। এছাড়া, কয়েকটি হলে বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল বলেও জানা যায়।
চব্বিশের পাঁচ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি ওঠে। এরইপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল দেয়।
এর মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নয় সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
তবে, ডাকসু নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত ছাত্র শিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন বামজোট মনোনীত প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বিএম ফাহমিদা আলম।
এই রিটের শুনানি নিয়েই হাইকোর্ট ভোট স্থগিতেরনির্দেশনা দেন। এস এম ফরহাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করতেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
হাইকোর্টে রিটের শুনানিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন আরেক আাইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
ডাকসু নির্বাচনের জন্য ইতোমধ্যে ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ আলাদা প্যানেল দিয়েছে। বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো দুটি প্যানেলে দিয়েছে। পূর্ণ ও আংশিক মিলিয়ে মোট প্যানেল ১০টির মতো।
এই নির্বাচনে ডাকসুর ২৮টি পদে মোট ৪৭১জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া, ১৮টি হলের ১৩টি পদে মোট এক হাজার ৩৫জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।,
রিটকারীর পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া শুনানিতে মামলার আইনি দিকগুলো তুলে ধরেন। অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ইতোমধ্যে নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে জমজমাট প্রচারণাও করেছেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি ওঠে। এরইপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচন হয়েছে ৩৭ বার। আর স্বাধীনতার পর মাত্র ৭ বার ডাকসু নির্বাচন হয়। যারমধ্যে সবশেষ ভোটগ্রহণ হয় ২০১৯ সালে।,
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.