ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় পর উত্তর কোরিয়ায় ঐতিহাসিক ও বিরল সফরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সবশেষ ২০০০ সালে তিনি যখন সেখানে গিয়েছিলেন তখন বতর্মান নেতা কিম জং উনের বাবা কিম জং ইল ক্ষমতায় ছিলেন।
চলমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে পুতিনের এবারের সফরটি নানা কারণে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্লেষকরা বলছেন দুই দেশের সম্পর্ক আগের যেকোন সময়ের চেয়ে শক্তিশালী এবং দৃঢ় অবস্থায় রয়েছে, মূলত এ বিষয়টি বোঝাতেই পিয়ংইয়ং সফরে গেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। একইসঙ্গে, দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো বাড়াতেও সফরে দুই নেতার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে বলেও মনে করছেন তারা। আর এক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই আলোচনায় প্রাধান্য পাবে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অস্ত্র সহায়তার বিষয়টি। বিশেষ করে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে অত্যাধুনিক অস্ত্রের আদান-প্রদান এবং পরমাণু অস্ত্রের বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পেতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধে টিকে থাকতে এবং জয়ী হতে হলে রাশিয়ার প্রয়োজন বিপুল পরিমান অস্ত্র। অন্যদিকে, উত্তর কোরিয়ার প্রয়োজন কারিগরি সহযোগিতা। আর তাই পুতিনের এবারের পিয়ংইয়ং সফরে এ বিষয়ে দু্ই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র চুক্তি হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।'
সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া অস্ত্র রাশিয়ার অভ্যন্তরে ব্যবহারের জন্য ইউক্রেনকে অনুমতি দেয় ওয়াশিংটন। প্রায় একই ধরনের অনুমতি দেয় পশ্চিমা আরও কয়েকটি রাষ্ট্র। যদিও, এক্ষেত্রে কেবল রাশিয়ার সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করেই হামলা চালানো যাবে বলে কিয়েভকে জানায় তারা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সেনা অভিযান জোরদারের পাশাপাশি নিজেদের অস্ত্রের ভান্ডার আরও সমৃদ্ধ করার তাগিদ অনুভব করে মস্কো। এ অবস্থায় উত্তর কোরিয়ার তৈরি আর কি ধরনের অস্ত্র ভবিষ্যতে রাশিয়ায় সরবরাহ করা হবে তা পুতিনের এ সফরে চূড়ান্ত হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে, এক্ষেত্রে অনেকেই মনে করছেন, রাশিয়ায় অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহের বিনিময়ে এবার কেবল জ্বালানি ও খাবারের নিশ্চয়তায় সন্তুষ্ট থাকবে না পিয়ংইয়ং। বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্প্রতি মহাকাশে গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে ব্যর্থ হওয়ায় এক্ষেত্রে রাশিয়ার কাছ থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তা চাইতে পারে উত্তর কোরিয়া। এছাড়াও, পারমাণবিক সাবমেরিন ও স্যাটেলাইট নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষায়ও মস্কোর কাছে সাহায্য চাইতে পারে দেশটি।
তবে, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র বিনিময় বা এ সংক্রান্ত যেকোন ধরনের সহযোগিতার বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর তাই, পুতিন-কিম বৈঠকে পারমাণবিক ইস্যুতে আলোচনার সারমর্ম গোপন রাখা হতে পারে বলেও ধরাণা অনেকের।'
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.