নিজস্ব প্রতিবেদক: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী এবং নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ছাড়াই পাস করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তার কোর্স শিক্ষক ছিলেন একই বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. রুহুল আমিন। তবে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।জানা যায় স্যারের সাথে আগে থেকেই ওই ছাত্রীর গোপন সম্পর্ক রয়েছে
তার সহপাঠীরা জানান, ১৬ জুলাইয়ের পর থেকে সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন না। ঐশীর মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের সব পরীক্ষা জুলাই বিপ্লবের আগেই শেষ হয়েছিল। তবে প্রফেসর ড. রুহুল আমিনের একটি কোর্সের মিড টার্ম পরীক্ষা বাকি ছিল। জুলাই-আগস্টের পর থেকে নিষিদ্ধ সংগঠনের নেত্রী ঐশী আর কখনো ক্যাম্পাসে আসেননি এবং কোনো পরীক্ষায় অংশ নেননি।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, পরীক্ষা না দিয়েও ঐশী প্রফেসর ড. রুহুল আমিনের ওই কোর্সে কন্টিনিউয়াস নম্বর হিসেবে ২১ পেয়েছেন। তার ব্যাচের শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, ঐশীকে জুলাই-আগস্টের পর থেকে আর কখনো বিভাগে দেখা যায়নি।
তাদের অভিযোগ, জুলাই বিপ্লবের সময় আমাদের ওপর হামলাকারী সংগঠনের নেত্রীর সঙ্গে আমরা কিভাবে ক্লাস করব? কিভাবে পরীক্ষায় অংশ নেব? ঐশীর ব্যাচমেট ইমরান বলেন, ‘এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। যদি এদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে, তার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই নিতে হবে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনো নিষিদ্ধ সংগঠনের কাউকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখতে চাই না। তাদের ক্লাস কিংবা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ তো কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী বলেন, ‘আমি পরীক্ষা দিয়েছি, তবে কবে পরীক্ষা দিয়েছি তা মনে নেই।’ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেও পাস করার ব্যাপারে প্রফেসর ড. রুহুল আমিন বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের আগেই আমি পরীক্ষা নিয়েছি। কারণ, মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের সব বিষয় আগেই শেষ করে ফেলছি আমরা। আর এই মিড পরীক্ষাটি মে মাসে নিয়েছি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুলাই আগস্টের আগে ওই শিক্ষক পরীক্ষা নেননি বরং ১০ ডিসেম্বর পরীক্ষা নিয়েছেন এবং ওই নিষিদ্ধ সংগঠনের নেত্রী যে পরীক্ষা দেননি তার প্রমাণ এই প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। এমনকি ঐশী যে পরীক্ষা দেননি তার সহপাঠীরাই সেই সাক্ষ্য দিয়েছেন। গণিত বিভাগের পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক মো. হান্নান মিয়া বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কোর্স শিক্ষকরা এসব বিষয় দেখাশোনা করেন।'
তারাই আমাদের রেজাল্ট প্রদান করেন এবং আমরা সেই রেজাল্ট পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে প্রেরণ করি। এ প্রক্রিয়ায় আমার কোনো ব্যক্তিগত ভূমিকা বা দায়বদ্ধতা নেই।’ গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. কমলেশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমি জুলাই অভ্যুত্থানের পর ওই শিক্ষার্থীকে বিভাগে কখনো দেখিনি। আমি বিষয়টি শুনেছি এবং শোনার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অবহিত করেছি। কারণ এই দায় বিভাগ কোনোভাবেই বহন করবে না।’ উল্লেখ্য , বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ১১ তম ব্যাচের (১৮-১৯ সেশন) শিক্ষার্থী সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী। তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বেরোবি শাখা সাংগঠনিক সম্পাদক।'