
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদেশ যাওয়ার আগে স্ত্রীর নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না খোলায় জামাইয়ের মাথা ফাটিয়েছেন শ্বশুর। রোববার (১৪ জুলাই’) বিকেলে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের বনগ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের বনগ্রাম এলাকার মো. নজরুল শেখের ছেলে মো. রাশেদুল শেখের (২৭) সঙ্গে সুমি খাতুনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। রোববার বিকেলে এরশাদ ফকির ৮-৯ জনকে নিয়ে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে যান। মেয়ের জামাই রাশেদুল শেখের কাছে জানতে চান মেয়ের নামে কেন ব্যাংক হিসাব খোলা হয়নি।
মেয়ের জামাই রাশেদুল বলেন, এটা আমাদের পারিবারিক ব্যাপার। এ কথা শুনে এরশাদ ফকির (৪৫) রেগে গিয়ে মেয়ে সুমি খাতুনের নামে ব্যাংক হিসাব না খোলার কারণে জামাইয়ের মাথায় দা দিয়ে কোপ দেন এবং বিয়াই নজরুল শেখ ও বিয়ান রোজিনা বেগমকে বেধড়ক মারধর ও বিবস্ত্র করে ফেলেন। পরে ইজ্জত বাঁচাতে রোজিনা বেগম পুকুরে ঝাঁপ দেন।
মো. নজরুল শেখ বলেন, আমার ছেলে রাশেদুলকে পাশের ঘোড়ামারা গ্রামের মো. এরশাদ ফকিরের মেয়ে মোছা. সুমি খাতুনের সঙ্গে দুই বছর আগে পারিবারিকভাবে রেজিস্ট্রি কাবিননামা মূলে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর থেকেই আমার বিয়াই (ছেলের শ্বশুর) নানা অজুহাতে আমার বাড়িতে গিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করে। তার মেয়ের নামে জমি লিখে দিতে বলে, আমার ছেলে রাশেদুল শেখ জীবন-জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ইতোমধ্যে তার পাসপোর্ট, ভিসাও হয়েছে। এ খবর পেয়ে আমার বিয়াই আমার ছেলের বিদেশে যাওয়ার আগে আমার পুত্রবধূ সুমি খাতুনের নামে ব্যাংক হিসাব খুলে যাওয়ার জন্য ছেলের উপর চাপ দিতে থাকে। ছেলে রাজি না হওয়ায় বিয়াই এরশাদ ফকির ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ছেলেকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে মেহের মণ্ডল (২৬), কলম মণ্ডল (৩০), জামাল মণ্ডল (৪৮), বক্কার শেখ (৪৫) হামলা করে।
তিনি বলেন, আমার বারান্দায় থাকা দা এনে ছেলের মাথার মাঝখান বরাবর সজোরে কোপ মেরে মারাত্মক রক্তাক্ত ও জখম হয়। আমি এর প্রতিবাদ করলে অন্যরা আমার শরীরের বিভিন্নস্থানে কিল-ঘুষি মারে, আমার স্ত্রী বাধা দিতে গেলে এরশাদ ফকির ও কলম মণ্ডল আমার স্ত্রী রোজিনা বেগমকে টানা-হেঁচড়া করে কিল-ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। এমনকি আমার স্ত্রী বিবস্ত্র হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তখন সে প্রাণের ভয়ে ও ইজ্জত বাঁচাতে বাড়ির পাশের পুকুরে ঝাঁপ দিলে এরশাদ ফকির, কলম মণ্ডল ও বক্কার শেখ পুকুরে নেমে আমার স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে পানিতে চুবায়।’
তিনি আরও বলেন, এ সময় তারা আমার স্ত্রীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এ অবস্থায় আমি, আমার স্ত্রী ও আমার ছেলে রাশেদুলের চিৎকারে শুনে পাশের আহম্মদ ফকিরের ছেলে রবিউল, রেজাউল শেখের ছেলে মো. রাকিব, মো. হানেফ শেখের স্ত্রী মোছা. নাছিমা বেগমসহ অন্যরা এগিয়ে আসে। তখন বে-আইনি ও অবৈধভাবে রাশেদুলের ঘরে ঢুকে জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। এরশাদ ফকির টেবিলের ড্রয়ার ভেঙে বিদেশে যাওয়ার জন্য জমাকৃত নগদ (দুই লাখ) টাকা, দুটি স্বর্ণের রুলি, দুটি কানের দুল ও একটি গলার চেইন, যার আনুমানিক মূল্য ৩ লাখ টাকা এবং সুমি খাতুন ও তার (সাত) মাসের কন্যাকে নিয়ে যায়। বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আমার ছেলে চিকিৎসাধীন আছে। এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।
বালিয়াকান্দি থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।