নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বামীর প্রাণ বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দান করেছিলেন স্ত্রী উম্মে সাহেদীনা টুনি। তবে সেই স্বামী মোহাম্মদ তারেক সুস্থ হয়ে জড়িয়ে পড়েন পরকীয়ায়। শুধু তাই নয়, স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে এখন প্রেমিকার সঙ্গে বসবাস করছেন তিনি।
ঘটনাটি সাভার সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর কলমা এলাকার। এ ঘটনায় স্বামী তারেকের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের দাবিতে মামলা করেছেন স্ত্রী টুনি। অভিযুক্ত তারেক বর্তমানে জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক রয়েছেন।
২০০৬ সালে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। পরের বছর জন্ম নেয় তাদের একমাত্র সন্তান আজমাইন দিব্য। ২০০৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে তারেক কিডনি রোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকরা জানান, তার দুটি কিডনিই অচল হয়ে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য টুনি স্বামীকে ভারতে নিয়ে যান এবং কয়েক বছর পর নিজের একটি কিডনি স্বামীকে দান করেন।
কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের পর তারেকের আচরণে আসে劇পরিবর্তন। স্ত্রী টুনির অভিযোগ, সুস্থ হওয়ার পরই তারেক এক তালাকপ্রাপ্তা নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এরপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। একপর্যায়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন তারেক।
টুনি জানান, স্বামীর চিকিৎসা চালাতে গিয়ে তিনি নিজের গয়না বিক্রি করেছেন, খুলেছেন বিউটি পার্লার ও বুটিকস। প্রতিমাসে আয় করতেন ৪০-৫০ হাজার টাকা, যার সিংহভাগ ব্যয় হতো স্বামীর চিকিৎসায়। চিকিৎসকের পরামর্শে প্রতিবছর তিনবার ভারতে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হতো, যার জন্য ব্যয় হতো লাখ লাখ টাকা।
২০১৯ সালের ২৬ অক্টোবর দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসক কৈলাস নাথ সিংয়ের তত্ত্বাবধানে কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়। কিন্তু আইসিইউ থেকে কেবিনে ফেরার পরই তারেকের আচরণে নেতিবাচক পরিবর্তন দেখতে পান টুনি।
এরপর ২ ফেব্রুয়ারি টুনি সাভার মডেল থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু তারেক মুচলেকা দিয়ে অভিযোগ তুলে নেন। নির্যাতন আরও বাড়লে টুনি বাবার বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন এবং ২২ এপ্রিল আদালতে মামলা করেন।
টুনির মা বলেন, “আমরা আদালতের কাছে তারেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি, যাতে আর কোনো মেয়ের জীবন এভাবে ধ্বংস না হয়।”
তারেকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার অবস্থান জানা যায়নি। তার পরিবারের কেউও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.