
শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার শীলকূপ ইউনিয়নের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এখন যেন শিক্ষার্থীদের জন্য মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বাঁশখালী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদ ও বিভিন্ন হাট-বাজারে যাতায়াতকারী হাজারো মানুষ প্রতিদিনই পোহাচ্ছেন সীমাহীন দুর্ভোগ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শীলকূপ ইউনিয়ন পরিষদ সড়ক, মরহুম আবুল হোসেন সড়ক এবং ডাক বাংলো সড়কের একাধিক অংশে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে, কোথাও কোথাও জমে আছে হাঁটুসমান পানি। শিক্ষার্থীদের বই খাতা মাথায় রেখে কর্দমাক্ত পথে চলাচল করতে হচ্ছে। কেউ কেউ ভারসাম্য হারিয়ে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে, ভিজে যাচ্ছে ইউনিফর্ম ও স্কুলব্যাগ।
স্থানীয়রা জানান, সড়ক সংস্কারের নামে কয়েক বছর আগে কার্পেটিং ও ইট খুলে ফেলা হলেও এরপর আর কোনো দৃশ্যমান কাজ হয়নি। বর্ষা এলেই দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে যায়। অথচ এসব সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করেন, এরমধ্যে রয়েছে রংগিয়াঘোনা মনছুরিয়া ফাযিল মাদরাসা, বাঁশখালী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, মনকিচর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, মনকিচর ওয়াজেদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
একাধিক অভিভাবক, শিক্ষক ও এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, “জনপ্রতিনিধিরা ভোটের সময় এসে আশ্বাস দিয়ে যান, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। প্রশাসনেরও যেন এসব নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই।”
বাঁশখালী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ওমর ফারুখ জানান, “জালিয়াখালী বাজার হতে স্কুল পর্যন্ত সড়কের দুর্দশা দীর্ঘদিনের। এ স্কুলের প্রায় ১৮০০ শিক্ষার্থী প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে শিক্ষার পরিবেশ যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি বাড়ছে শারীরিক ঝুঁকি।”
শীলকূপ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাশেদ নুরী বলেন, “বৃষ্টির কারণে ঠিকাদারেরা কাজ শুরু করতে পারছে না বলে জানিয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ সড়কের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামশেদুল আলম ‘বাংলা এডিশন’কে বলেন, “এলাকাবাসীর দাবি ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ বিবেচনায় আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে বিষয়টি অবহিত করি এবং দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদ ‘বাংলা এডিশন’কে বলেন, ‘এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় আমাকে অবগত করেছেন। সরেজমিন পরিদর্শন করা হবে। সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে অতিদ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয়দের দাবি, অন্তত ১৫-২০ হাজার মানুষ এই তিনটি সড়কের উপর নির্ভরশীল। সড়কগুলো দ্রুত সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করলে দুর্ভোগ লাঘব হবে। শিক্ষার্থীরাও ফিরে পাবে নিরাপদ স্কুল যাত্রা।