
নিজস্ব প্রতিবেদক: আমরা এখন এতিম হয়ে গেছি, আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব? বাবাকে যারা হত্যা করেছে আমরা তাদের বিচার চাই।’ এমনই হৃদয়বিদারক আর্তি জানিয়েছে ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের কাছে নির্মমভাবে নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের ১৪ বছরের মেয়ে সোহানা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে নিহত সোহাগের মরদেহ ঢাকা থেকে তার গ্রামের বাড়ি বরগুনায় আনা হয়। পরে সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকায় মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সোহাগের বয়স যখন মাত্র সাত মাস, তখন বজ্রপাতে তার বাবা আইউব আলী মারা যান। এরপর মা আলেয়া বেগম সন্তানদের নিয়ে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় চলে আসেন। সোহাগ ঢাকায় বড় হন এবং দীর্ঘদিন ধরে মিটফোর্ডে ‘মেসার্স সোহানা মেটাল’ নামের একটি দোকান পরিচালনা করে আসছিলেন।
ওই দোকান থেকে প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করতেন অভিযুক্তরা। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় শুরু হয় দ্বন্দ্ব। একপর্যায়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়।
বুধবার বিকেলে তাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে চাপ প্রয়োগ করা হয় চাঁদার জন্য। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় সোহাগকে পাথর দিয়ে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
নিহত সোহাগের স্ত্রী লাকি বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে যে ব্যবসা করছিলেন, সেটিই ছিল তার একমাত্র উপার্জনের পথ। কিন্তু যারা তাকে হত্যা করেছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে ওই ব্যবসা থেকে চাঁদা দাবি করছিল। আমার স্বামী রাজি না হওয়ায় তারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে।’
সোহাগের বোন ফাতেমা বেগম বলেন, ‘প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা চাওয়া হতো। এমনকি তারা দোকানও দখল করতে চেয়েছিল। ভাইয়ের প্রতিবাদই কাল হলো।’
পরিবারের সদস্যরা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। হত্যাকাণ্ডটি এলাকায় চরম ক্ষোভ ও শোকের সৃষ্টি করেছে।











