
অনলাইন ডেস্ক: ইসরাইল ও সিরিয়া যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের তুরস্কে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও সিরিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত টম ব্যারাক। শুক্রবার (১৮ জুলাই) এক্সে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে তিনি এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
ব্যারাক জানান, যুদ্ধবিরতির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে তুরস্ক, জর্ডানসহ অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতা হ্রাসে একটি ‘মাইলফলক’, যা সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ সংকট নিরসনের সম্ভাবনাও তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই দূত বলেন, “আমরা ড্রুজ, বেদুইন ও সুন্নি সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—অস্ত্র নামিয়ে রাখুন এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সঙ্গে শান্তি ও সম্প্রীতির পথে এগিয়ে আসুন। একত্রে গড়ে তুলুন একটি ঐক্যবদ্ধ, শান্তিপূর্ণ সিরিয়া।”
এর আগে গত বুধবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইসরাইল বিমান হামলা চালায়। তাদের দাবি, ড্রুজ সম্প্রদায়কে রক্ষার উদ্দেশ্যেই এই হামলা চালানো হয়। উল্লেখ্য, ড্রুজরা আরব ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিসেবে সিরিয়ায় দীর্ঘকাল বসবাস করছে।
সিরিয়ার সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ওই হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হন। হামলার সময় সরাসরি সম্প্রচারিত এক টেলিভিশন ভিডিওতে দেখা যায়, স্টুডিওতে থাকা উপস্থাপক বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্কিত হয়ে মাথা নিচু করে ফেলেন।
সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা একইদিন রাতে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে জানান, দক্ষিণাঞ্চলের সুয়েইদা অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। এই এলাকায় সম্প্রতি ড্রুজ ও বেদুইনদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে সরকারি বাহিনীও জড়িয়ে পড়ে। পরে ড্রুজ গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে পৃথক একটি যুদ্ধবিরতিতেও সম্মত হয় সরকার।
তবে একই ভাষণে শারা অভিযোগ করেন, “ইসরাইল আমাদের জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায় এবং সিরিয়াকে একটি দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতার মধ্যে ঠেলে দিতে চায়।”
এই যুদ্ধবিরতির ফলে সিরিয়া-ইসরাইল উত্তেজনা সাময়িক প্রশমিত হলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, স্থায়ী শান্তির জন্য দীর্ঘমেয়াদি কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার বিকল্প নেই।