সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুনন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার রতন কুমার রায় দুর্নীতির তোপের মুখে পড়ে তার রুমে সরাসরি প্যান্টের চেইন খুলে বিশেষ অঙ্গ দেখালেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে জেলাজুড়ে বইছে নিন্দার ঝড়।
আজ (১২ আগস্ট) সোমবার বিকেল পৌনে ৬টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে তত্ত্বাবধায়কের পদত্যাগের দাবীতে এ কর্মসূচি পালন করেন।
এরআগে গতকাল (১১ আগস্ট) রোববার সকালে এ হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। তার এ অশালীন ভাষা ও অঙ্গভঙ্গিতে কি বোঝাত চেয়েছেন এ নিয়ে সমালোচনার যেন শেষ নেই।
এর আগে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভুয়া রসিদ ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে আলাউদ্দিন নামের এক যুবক টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল। এ ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের পর জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়। এছাড়া ঘটনাটি তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (২৯জুন) সকালে সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, সহকারি তত্ত্বাবধায়ক ডা: সাইফুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: রতন কুমার রায় এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তদন্ত কমিটিতে থাকা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ফরিদুল ইসলাম জানান, তত্ত্বাবধায়কের নির্দেশনায় আজকে এ বিষয়ে বসা হয়েছিল। প্রাথমিক অবস্থায় ঘটনার সত্যতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে দ্রুত তদন্তের কাজ শেষ হবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে হাসপাতালটি সুনামের সাথে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা দিয়ে আসছে। হাসপাতালে কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে ডিজিটাল কায়দায় রশিদ ভাউচার জাল করে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিল আলাউদ্দিন নামের এক যুবক।
প্রতিদিন রশিদ কেটে ইসিজি ও ডায়াবেটিসের পরীক্ষা বাবদ ভুয়া রশিদ দিয়ে ফি নিচ্ছে। ডাক্তার পরীক্ষা লিখছে না, এমন কোন রোগী যদি ইসিজি ও ডায়াবেটিকস পরীক্ষা না করা হয়, তবে তার সাথে খারাপ আচারণ করা হয়। তবে হাসপাতালে রোগী ভর্তি হলেই ইসিজি ও ডায়াবেটিকস পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। ইসিজি ৮০ টাকা ও ডায়াবেটিকস পরীক্ষা বাবদ ৫০ টাকা বাধ্যতামূলক নেওয়া হচ্ছে। মাসে প্রায় সরকারি রশিদ নয়, ভুয়া রশিদ কেটে প্রতিটি বিভাগ থেকে লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এমনকি একজন রোগী যদি ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হয় তাকেও ইসিজি ও ডায়াবেটিকস পরীক্ষা করতে বাধ্য করা হচ্ছে।'
আরো জানে যায়, ২০১৮ সালে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের একজন মেডিকেল অফিসার সুকৌশলে ওষুধ কোম্পানীর নিকট থেকে থেকে ইসিজি মেশিন গ্রহণ করে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ইসিজি ও ডায়াবেটিকস পরীক্ষা করার পদ্ধতি চালু করা হয়। এতে ২০১৮ সাল থেকে ১০৯নং কক্ষে অবস্থিত সরকারি ইসিজি মেশিনে ও ব্লাড বিভাগে কেউ আর ডায়াবেটিকস পরীক্ষা করতে যায় না। এতে সরকারি ইসিজি ও ডায়াবেটিকস মেশিন ব্যবহার না হওয়ায় সরকার কোন রাজস্ব পাচ্ছে না ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ভুয়া রশিদ দিয়ে ইসিজি ও ডায়াবেটিকস এর পরীক্ষা ফি বাবদ ওই টাকাগুলো গ্রহণ করে থাকে।'
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.