
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের কাজের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন এ প্রকল্পে গাইডওয়াল নির্মাণে রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ও কাজের দীর্ঘসূত্রিতাসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চরমোনহারপুর বাজার থেকে দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ৭৫০ মিটার সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজের দায়িত্ব পায় নূর এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০২৪ সালের জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। দীর্ঘসূত্রিতার কারণে গত বছরের আগস্টে প্রথম ঠিকাদার কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালে পরবর্তীতে রেজাউল করিম লিটন নামের আরেক ঠিকাদার প্রকল্পের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সময়সীমা চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হলেও তাও শেষ হয়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, রড, ইট ও সিমেন্টের মান নিয়ন্ত্রণ না করেই কাজ চলছে। গাইডওয়ালে রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার, মেকাডাম ও সাব-বেজে নিম্নমানের খোয়া ও পোড়া মাটি ব্যবহারের বিষয়টি উদ্বেগ তৈরি করেছে। প্রাইম কোডে ব্যবহৃত তরল উপকরণ বৃষ্টিতে ধুয়ে যাওয়ায় রাস্তার স্থায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা।
দুর্গাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুল গফুর বলেন, “রাস্তাটি মজবুত করার কথা থাকলেও ঠিকাদার নিম্নমানের খোয়া ও ইট দিয়ে দায়সারা কাজ করছেন। ইতোমধ্যে অনেক জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে।”
স্থানীয় আরেকজন বাসিন্দা রাশিদুল ইসলাম বলেন, “খোয়ার মান এতটাই খারাপ যে, হাতে চেপেই ভেঙে যাচ্ছে। প্রাইম কোডের তেল বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে।”
চরমোনহারপুর গ্রামের আতাউর রহমান বলেন, “গাইডওয়ালে রড না দিয়ে বাঁশ ব্যবহৃত হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে এটি ভেঙে পড়বে বলে আশঙ্কা।”
এ বিষয়ে শাহজাদপুরের বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, “এলজিইডির কিছু অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে আঁতাত করে ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করে চলেছেন। বিষয়টি দ্রুত তদন্ত হওয়া দরকার।”
অভিযোগ অস্বীকার করে বর্তমান ঠিকাদার রেজাউল করিম লিটন বলেন, “কাজ এখনো চলমান। রাস্তার কাজ শতভাগ নিখুঁত হওয়া কঠিন হলেও মান বজায় রেখে কাজ করছি।”
এলজিইডির শাহজাদপুর উপজেলা সার্ভেয়ার লতিফুর রহমান বলেন, “কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজের মানের ভিত্তিতে বিল পরিশোধ করা হবে। আমি নিজেই কাজ তদারকি করছি।”
শাহজাদপুর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী এ এইচ এম কামরুল হাসান রনি বলেন, “বিষয়টি আমি আগে জানতাম না। এখন সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”