সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সহকারী পরিচালক ডা. আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার বরাদ্দ ও ভাড়া ব্যবস্থাপনায় নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নিয়ম অমান্য করে একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী বদলির পরও হাসপাতালের কোয়ার্টারে থেকে যাচ্ছেন। অনেকে আবার অন্যের নামে বরাদ্দ পাওয়া বাসায় বসবাস করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে কোয়ার্টার বরাদ্দ ও ভাড়ায় অনিয়মের বিষয়টি দীর্ঘদিনের। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে এবং প্রকৃত কর্মকর্তারা বাসা না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন। স্থানীয়রা দ্রুত স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, হাসপাতালের বাসাগুলো তিন শ্রেণিতে ভাগ করা রয়েছে। ১ম শ্রেণির ডাক্তারদের জন্য ১২০০ স্কয়ারফিট, ২য় শ্রেণির নার্সদের জন্য ১০০০ স্কয়ারফিট
এবং ৩য় শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য ৮০০ স্কয়ারফিটের কোয়ার্টার বরাদ্দ রয়েছে। যা শ্রেনি ভিত্তিক সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বাসা বরাদ্দের অর্থ প্রদান করা হয়ে থাকে।
অন্যদিকে মেডিকেল কলেজ অংশে রয়েছে দুটি ক্যাটাগরির ভবন— একটি ৮০০ স্কয়ারফিটের ছয়তলা ভবন এবং অপরটি ৬০০ স্কয়ারফিটের ভবন।
বদলি হওয়া কর্মকর্তারাদের বিষয়ে একাধিকসূত্র থেকে জানা যায়, ইউনানী মেডিকেল ডাক্তার আব্দুর রহিম গত বছরের ডিসেম্বর মাসে সদর হাসপাতালে বদলি হলেও এখনো হাসপাতালের কোয়ার্টারে বসবাস করছেন। এ বিষয়ে তিনি জানান, সন্তানের লেখাপড়ার সুবিধার্থে পরিচালকের অনুমতি নিয়ে নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করছি।
ফার্মাসিস্ট কামরুল হাসান তারেকও বদলি হয়েছেন গত ১৮ জুন ২০২৫ তারিখে, তবুও তিনি হাসপাতালের কোয়ার্টারে রয়েছেন। সাংবাদিক পরিচয় জানার পর তিনি আর কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এছাড়া মেডিকেল টেকনোলজিস্ট কুদ্দুসও দীর্ঘদিন বকুল কোয়ার্টারে বসবাসের পর সম্প্রতি রুম ছেড়ে দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তবে বরাদ্দ সংক্রান্ত নথি সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না।
সিনিয়র নার্সদের কোয়ার্টার দখলের অভিযোগে হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার সেলিনা খাতুন ১০৫০ স্কয়ারফিটের একটি কোয়ার্টারে থাকছেন, যদিও তার নামে কোনো সরকারি বরাদ্দপত্র নেই বলে জানা গেছে। তিনি বলেন, একই পদে থাকা হোসাইন নামের একজনের নামে বরাদ্দ আছে। তবে আমি নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করে থাকি। তবে অভিযোগ রয়েছে, নিম্নগ্রেডের কর্মচারীর নামে বরাদ্দকৃত বাসায় সিনিয়র কর্মচারী থাকায় সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তুলনায় কম পরিমাণ অর্থ কোষাগারে জমা পড়ছে। এতে সরকারি রাজস্ব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অভিযোগ বিষয়ে সহকারী পরিচালক ডাঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, বাসা বরাদ্দের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। সব অনুমতি দেন পরিচালক স্যার। আমি এ সংক্রান্ত কোনো কমিটিতেও নেই।
অন্যদিকে হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এ.টি.এম. নুরুজ্জামান বলেন, বরাদ্দকৃত বাসা হেরফের করার সুযোগ নেই। বিষয়টি দেখভালের জন্য একটি কমিটি রয়েছে, যার প্রধান সহকারী পরিচালক। অভিযোগগুলো তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.