নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
গত দুই বছর ধরেই সিরাজগঞ্জ এলজিইডিতে বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম, নিম্নমানের কাজ, ঠিকাদার হয়রানি ও তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ ওঠে সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এলজিইডি ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অভিযোগ তদন্ত করছেনরছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, গত রোববার (১৩ জুলাই) স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধানের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয় নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামকে ঢাকায় এলজিইডির সদর দপ্তরে বদলি করা হয়েছে। আগামী ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে নতুন নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউর রহমান সিরাজগঞ্জে যোগদান করবেন। নির্ধারিত সময়ে চার্জ হস্তান্তর না হলে সাইফুল ইসলাম স্ট্যান্ড রিলিজ হিসেবে গণ্য হবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সদ্য যোগদানকারী নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউর রহমান জানান, আজ আমি সিরাজগঞ্জ এলজিইডিতে যোগদান করেছি। দুই এক দিনের মধ্যে চার্জ বুঝে নেব।
অভিযোগ রয়েছে, সাবেক এমপি ও এলজিইডির কো-চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের সহযোগিতায় সাইফুল ইসলাম সিরাজগঞ্জে নিয়োগ পান। এরপর থেকেই তিনি কমিশন বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন। ঠিকাদারদের হয়রানি, বিল কর্তন, রোলার ভাড়া ও অতিরিক্ত জামানত আদায়, বিল প্রদানে অর্থ দাবি এবং কাজ বাস্তবায়নে বাধাঁ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এছাড়া সরকারি ও বৈদেশিক অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোর তদন্তে অসহযোগিতা, কাজ না করেও বিল উত্তোলন, দরপত্র ছাড়াই কাজ বাস্তবায়ন, ডিজিটাল টেন্ডারে কারচুপিসহ একাধিক অনিয়মের তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
বিশেষ করে খাল খননে মৃত ব্যক্তির নামে স্বাক্ষর দিয়ে ভুয়া মাস্টার রোল তৈরি করে কয়েক কোটি টাকা উত্তোলন, এবং তাড়াশের বারুহাস ও কুন্দইল সড়কের ১২ কোটি টাকার প্রকল্পে অনিয়মের প্রমাণ মেলে তদন্তে।
এছাড়া, এলজিইডির অদক্ষতার কারণে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২৭ কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট অনুপভোগী থাকে সিরাজগঞ্জবাসী।
স্থানীয় ঠিকাদাররা অভিযোগ করেছেন, সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে এলজিইডি বারবার অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে, আর কর্তৃপক্ষ তা দেখেও ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে জেলার উন্নয়ন কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.