সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কবিগুরুর নামে প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট বইয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী। রোববার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয়ে কিছু ছাত্র গ্রন্থাগারে প্রবেশ করে। তারা গ্রন্থাগারের ভেতরে বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট বইয়ের উপস্থিতি নিয়ে অভিযোগ তুলে। তাদের দাবি, এই বইগুলো "স্বৈরাচারপন্থি" এবং "অপ্রাসঙ্গিক"। অভিযোগের পর তারা গ্রন্থাগারের সামনের রাস্তায় শতাধিক বই পুড়িয়ে ফেলে। এ সময় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে শিক্ষার্থীরা দ্রুত সেখান থেকে চলে যায়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, "৫ আগস্টের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো বঙ্গবন্ধু বা আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট বই ছিল না, তবে রবিবার গ্রন্থাগারে এসে তারা এসব বই দেখতে পান।" তারা আরও অভিযোগ করেন, হঠাৎ করে এসব বইয়ের উপস্থিতি একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টার অংশ হতে পারে। শিক্ষার্থীদের দাবি, গ্রন্থাগারে এমন বই থাকার ঘটনা সাধারণ নয় এবং এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়েছে। তারা আরও জানান, এই বইগুলো অপসারণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে লিখিত আবেদন জানানো হবে।
এ বিষয়ে গ্রন্থাগারের দায়িত্বে থাকা আব্দুল মজিদ সংবাদকর্মীদের অনুরোধ করেন, "গ্রন্থাগারে না ঢোকার জন্য এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কেউ কোনো বক্তব্য প্রদান করবেন না।"বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য ড. সুমন কান্তি বড়ুয়া জানান, "এটা একটি আবেগের বশবর্তী হয়ে হওয়া ঘটনা। কিছু বই ছিল, যেগুলো নিয়ে শিক্ষার্থীরা আপত্তি তুলেছে। তারা কিছু বই পুড়িয়ে ফেলেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।"বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ও প্রতিক্রিয়া:
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম বিভাজন দেখা দিয়েছে। এটি প্রশ্ন তৈরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক চাপের বিষয়ে। শিক্ষার্থীরা তাদের মতামত প্রকাশের অধিকার দাবি করছেন, তবে প্রশ্ন উঠছে, কিভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে রাখা যায়। এটি এখন একটি জাতীয় ইস্যু হয়ে দাঁড়াতে পারে, যেখানে রাজনৈতিক এবং শিক্ষাগত স্বাধীনতার মধ্যে সঠিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে।