
জহুরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে এবার মহাসড়কেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করালেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। শ্রেণিকক্ষের মতই মনোযোগী হয়ে পাঠ গ্রহণ করলেন শিক্ষার্থীরাও।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত প্রতিকী পাঠদান কর্মসূচি পালন করা হয়। ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলে প্রতিকী এই পাঠদান কর্মসূচি।
নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে চলমান ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে ব্যতিক্রমী এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন মহাসড়ক ব্যবহারকারী বিভিন্ন যানবাহন ও যাত্রীরা।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজরিত সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে তারই রেখে যাওয়া ২২৫ একর জায়গা বরাদ্দ করে প্রায় নয় বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলা, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সঙ্গীত ও ব্যবস্থাপনা নামে পাচটি বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২শতাধিক।
৩৪ জন শিক্ষক, ৫৪ কর্মকর্তা ও ১০৭ জন কর্মচারি রয়েছেন এই প্রতিষ্ঠানে। শাহজাদপুর মহিলা কলেজ, সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া ডিগ্রি কলেজসহ ভাড়া করা দুটি বাড়িতে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। সকল সুবিধা নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণে প্রকল্প জমা দিলেও তা অনুমোদন হয়নি। নিষ্কন্টক ১০০ একর জমিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস নির্মাণে সর্বশেষ জমা দেওয়া হয়েছে ৫১৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প। যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর রয়েছে একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায়। আন্দোলনকারিরা বলছেন, পূর্ণাঙ্গ ডিপিপি অনুমোদন ও ক্যাম্পাসের কাজ শুরু না হওয়া অবধি চলবে ধারাবাহিক এই কর্মসূচি। কর্মসূচি চলাকালে একযোগে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি বিভাগের ১২টি ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টাব্যাপী আবারও মহাসড়কে ক্লাস নেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীরা বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দিয়ে একনেকে পাঠানোর পর সম্প্রতি পরিদর্শনে আসেন বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
পরিবেশ দূষণের বিষয়ে তার নেতিবাচক প্রতিবেদনের ফলেই প্রকল্পটি অনুমোদন হচ্ছে না দাবি করে তার পদত্যাগের দাবিতে নানা স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
প্রতিকী পাঠদান শেষে বক্তব্য দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর নজরুল ইসলাম, সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ইয়াত সিংহ শুভ, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান জান্নাতুল মাওয়া মুন, সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় সরকার, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রায়হান, জাকারিয়া ও অর্থনীতি বিভাগের সুজানা প্রমুখ।