
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিএনজি চালিত যানবাহনে অর্ধেক গ্যাস অর্ধেক হাওয়া দেওয়ার অভিযোগ এ্যালবাট্রস সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
অবৈধ উপায়ে ভিআইপি গাড়ি প্রবেশ করিয়ে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা।
এছাড়াও সিএনজিতে গ্যাসের চাপ দিয়ে নেওয়া হচ্ছে আরও ১০ টাকা করে চাঁদা।
নলকা ও সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের অর্ধেক রাস্তা ব্লক করে অবৈধ উপায়ে করছে ব্যবসা।
ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সিএনজি চালিত মালিক পক্ষ
রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
বিক্ষুব্ধ সিএনজি চালিত যানবাহনের চালকেরা
অর্ধেক গ্যাস অর্ধেক হাওয়া দিয়ে সিএনজি চালিত যানবাহন মালিকদের থেকে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জ শিয়ালকোল ইউনিয়নে অবস্থিত এ্যালবাট্রস এনার্জী এলপিজি ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।’
জানা যায়, এ্যালবাট্রস এনার্জী এলপিজি ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিক লুৎফর রহমান দিলু তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থাকাকালীন আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে সম্পূর্ণ পুরাতন মেশিনের দোহাই দিয়ে গ্যাসের পরিবর্তে অর্ধেক গ্যাস অর্ধেক হাওয়া দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। এছাড়াও সরকারি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নলকা ও সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের অর্ধেক সরকারি রাস্তা দখল করে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে এই ব্যবসা পরিচালনা করেন।’
দীর্ঘদিন স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে তাড়াশ-রায়গঞ্জ আসনের আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী লুৎফর রহমান দিলু ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। সিরাজগঞ্জ জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ৫ হাজারে অধিক সিএনজির জন্য সিরাজগঞ্জ সদরের এক মাত্র সিএনজি ফিলিং স্টেশন হওয়ার সুযোগ নিয়ে প্রতিটি সিএনজি চালক গ্যাস তুলতে গেলে অর্ধেক গ্যাস ও অর্ধেক হাওয়া-দেওয়ার অভিযোগ এনে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের রান্ধুনী বাড়ি গ্রামের আব্দুল করিম নামের সিনজি চালক বলেন, আমরা যখন বগুড়া থেকে সিএনজিতে গ্যাস তুলি তখন ৪০০ টাকার গ্যাস দিয়ে ৪টি ট্রিপ মারা যায় এবং এই সিরাজগঞ্জের এ্যালবাট্রস এনার্জী এলপিজি ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ৪০০ টাকার গ্যাস তুললে ২টি ট্রিপ মারলে শেষ হয়ে যায় গ্যাস। অর্থাৎ এই পাম্পে গ্যাসের টাকা নিয়ে অর্ধেক গ্যাস এবং অর্ধেক হাওয়া দেয় হয়। আর এই গ্যাসটি তুলতে প্রায় চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় লেগে যায়। যে কারণে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। দ্রুত তদন্ত করে সমস্যা সমাধানের আহ্বান করেন শ্রমিকরা।
‘এছাড়াও এ্যালবাট্রস এনার্জী এলপিজি ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন আওয়ামীলীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে গ্যাস তুলতে আসা সিএনজিগুলো ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করলেও অবৈধ উপায়ে ভিআইপি রাস্তা দিয়ে গাড়ি প্রবেশ করিয়ে প্রতিটি গাড়ি থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া অভিযোগ করেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা রানী গ্রামের সিএনজি চালক মো. সোরহাব আলী। তিনি আরো বলেন এদের বিষয়ে অভিযোগের কোন শেষ নেই। প্রতিটি সিএনজি থেকে গ্যাসের চাপ দেওয়ার জন্য আরো ১০ টাকা করে চাঁদা নেন এখানকার কর্মচারীরা।
অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে এ্যালবাট্রস এনার্জী এলপিজি ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, আগে ভিআইপি ভাবে গাড়ি প্রবেশের জন্য টাকা নেওয়া হতো বর্তমানে আমি বন্ধ করে দিয়েছি।
গ্যাস নিতে আসা সিএনজি চালকদের অর্ধেক গ্যাস অর্ধেক হাওয়া দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে এ্যালবাট্রস এনার্জী এলপিজি ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ক্যাশিয়ার মো. মজনু বলেন, আমাদের দুইটি মেশিন পুরাতন। সিএনজিতে গ্যাস দেওয়ার সময় বেশি চাপ প্রয়োগ করা যায় না। যদি চাপ দেই তা হলে, সিএনজিতে দুর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যে কারণে আমরা এভাবেই কাজ পরিচালনা করে থাকি।’
এই বিষয়ে এ্যালবাট্রস এনার্জী এলপিজি ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিক লুৎফর রহমান দিলু ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, এ্যালবাট্রস এনার্জী এলপিজি ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনে অর্ধেক গ্যাস অর্ধেক হাওয়া দেওয়া হয় এমন একটি অভিযোগ শুনেছি। মালিকপক্ষকে খবর দেওয়া হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।