অনলাইন ডেস্ক: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সামাজিক ব্যবসা, যুবশক্তি ও প্রযুক্তিই টেকসই ভবিষ্যত নির্মাণের মূল চাবিকাঠি। সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত সোশাল বিজনেস, ইয়ুথ অ্যান্ড টেকনোলজি শীর্ষক পার্শ্ব-সেশনে তিনি এ মত প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিশ্ব এক সংকটময় সময় পার করছে। জলবায়ু পরিবর্তন, বৈষম্য, সংঘাত ও শরণার্থী সংকট মানবতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব সমস্যা মোকাবিলায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও সমাধান প্রয়োজন। মানুষের কল্যাণ, সামাজিক ন্যায়বিচার ও পরিবেশ সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া। এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের বাজেট কমানো বা আন্তর্জাতিক সহায়তা হ্রাস প্রতিকূল প্রভাব ফেলতে পারে। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বৈশ্বিক সহযোগিতা বাড়ানো জরুরি।
তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইউনূস বলেন, কল্পনা ও উদ্ভাবনের শক্তি দিয়ে সমাজে স্থায়ী পরিবর্তন আনা সম্ভব। সামাজিক ব্যবসার উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ক্ষুদ্র উদ্যোগ থেকে শুরু হলেও আজ তা স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও খেলাধুলাসহ বিভিন্ন খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে।
প্রযুক্তি নিয়ে তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিগ ডেটা ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তি উন্নয়নের গতি বাড়াতে পারে, তবে তা অবশ্যই নৈতিকভাবে ও মানবকল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। শূন্য কার্বন নিঃসরণ, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ ও শূন্য বেকারত্ব—এই তিন লক্ষ্য সামনে রেখে নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে যেতে হবে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে সোমবার বিকেলে নিউইয়র্কে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। সফরসূচি অনুযায়ী, তিনি আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন এবং ২৭ সেপ্টেম্বর অভিবাসীদের সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। এছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফসহ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও তার সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.