
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক (অব.)-কে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার পর রাজধানীর ধানমন্ডির নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম। তিনি জানান, “সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১১ সালের ১৭ মে অবসর গ্রহণ করেন। বিচারপতি থাকাকালে তার একাধিক রায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়। বিশেষ করে, ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করার রায় রাজনৈতিক অঙ্গনে দীর্ঘস্থায়ী আলোচনার জন্ম দেয়। সমালোচকদের মতে, এ রায়ের ফলে দেশে রাজনৈতিক সংঘাতের পথ উন্মুক্ত হয়।
সম্প্রতি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এক সংবাদ সম্মেলনে তাকে ‘বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের কারিগর’ আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে খায়রুল হকের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলাও দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে।
খায়রুল হকের বিরুদ্ধে আরও রয়েছে প্রধান বিচারপতির ক্ষমতার অপব্যবহার, বিতর্কিত বিচারপতিদের শপথ পড়ানো, আগাম জামিনের এখতিয়ার হ্রাস, খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ, এবং ত্রাণ তহবিলের টাকা দিয়ে ব্যক্তিগত চিকিৎসা গ্রহণের অভিযোগ।
আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে তিনি আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি ১৩ আগস্ট পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে তিনি আড়ালে ছিলেন।
বর্তমানে তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলোর তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে ডিবি সূত্রে জানা গেছে।