ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: দেশে তো সাংবাদিকতাই নেই, সংস্কার কীভাবে হবে- এমন জটিল প্রশ্ন অস্বাভাবিক নয়। একান্ত ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণে বলতে পারি, নব্বইয়ের আগে সময়ের প্রয়োজনে যে সাংবাদিকতা হয়েছে সেটা মূলত পলিটিক্যাল এক্টিভিজম। নব্বইয়ের পরে প্রথমে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিভিত্তিক আইডেনটিটি জার্নালিজম, পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতায় পাস দেওয়াদের মাধ্যমে গড়ে ওঠে সিন্ডিকেট জার্নালিজম। একুশ শতকের শুরু থেকে সিন্ডিকেটের কবলে শুরু হয় এলিট বেইজড করপোরেট জার্নালিজম।
একুশ শতকের প্রথম দশকে হঠাৎ শুরু হয় অনলাইন জার্নালিজমের ‘আগ্রাসন’। ভিত কেঁপে যায় এলিট প্রিন্টমিডিয়া ও তারকা প্রসবকারী সম্প্রচার সাংবাদিকতার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভিত্তিক অনলাইনের এপিডেমিক জার্নালিজমের ঢেউয়ে ভেঙে পড়ে ফান্ডামেন্টাল ফ্রেম। কয়েক দশকের সাংবাদিকতার এই অস্থির জার্নিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ থেকে লিড দিয়েছেন মূলত পলিটিক্যাল এক্টিভিস্ট, আবেগময় ইতিহাস বিনির্মাণের কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী ও ভার্সিটির পাসওয়ালাদের সিন্ডিকেট।
বিগত সরকারের সময়ে ভার্সিটি এলিট সিন্ডিকেট ‘ডেমোক্রেসি নয় ডেভেলপমেন্ট’ স্লোগানে ‘গদি বা এজেন্সি জার্নালিজমের’ বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছেন। এদের এসিরুম জার্নালিজমের কবলে পড়ে রাজধানীর বাইরে মোনাজাত উদ্দিনের অনুসারীরা মার খেয়েছেন বছরের পর বছর ধরে।তাছাড়া এপিডেমিক জার্নালিজমের হাত ধরে ঢাকার বাইরেও ভয়াবহভাবে বিস্তার ঘটেছে এজেন্সি জার্নালিজমের। ফলে ক্ষমতার পট পরিবর্তনে ‘গদিমিডিয়ার’ অভিযোগে অফিসগুলোতে যে ন্যাক্কারজনক হামলা হয়েছে তা ইতিহাসে বিরল। এখন শুধু এজেন্সি জার্নালিজমের ‘কেবলাই’ বদলেছে, সবকিছু আছে আগের মতোই।
এমন অস্থির, বৈরী, বিকৃত সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে সাংবাদিক সমাজের সুরক্ষায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালার বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব হবে? পশ্চিমের উন্নত সমাজ ও রাষ্ট্রীয় বাস্তবতার আলোকে আমাদের গণমাধ্যমের জন্য নীতি প্রণয়ন কতটা সুফল বয়ে আনবে? বিশেষ করে আমাদের গণমাধ্যম আসলে বিজনেস না সেবাখাত সেটাই যখন নির্ধারণ হয়নি আজও।