লুৎফর রহমান: রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ও দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে প্রতিবেশীর জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে সলঙ্গার হাটিকুমরুল বাজারের উজ্জ্বল হোসেন গংদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, উজ্জ্বল হোসেনের ছোট ভাই সেলিম রেজা হাতে থাকা হাঁসুয়া দিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে বারবার ভুক্তভোগীদের দিকে তেড়ে আসছেন। এ সময় উজ্জ্বল, তার ছেলে মেহেদী হাসান হৃদয়, সাবেক ইউপি সদস্য তয়জুলসহ ১০-১৫ জন জমি দখলে নিয়ে বিভিন্ন গাছের চারা রোপণ করেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আলহাজ আজাদ আলী মাস্টার বাদী হয়ে সলঙ্গা থানায় উজ্জ্বল হোসেন, তার ছোট ভাই সেলিম রেজা, ছেলে মেহেদী হাসান হৃদয়সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে পূর্ব শত্রুতার জেরে সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল মৌজায় আজাদ আলী মাস্টারের বসতবাড়ির পশ্চিম পাশে মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত চলাচলের রাস্তা ভেকু মেশিন দিয়ে খনন করা হয়। এতে তার পরিবারের যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং টিন ও বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে দলীয় পেশিশক্তির প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করে উজ্জ্বল হোসেন গং। তাদের বাধা দিতে গেলে অভিযুক্তরা উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
ভুক্তভোগী আলহাজ আজাদ আলী মাস্টার (৭৭) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, "তারা শুধু আমাদের অবরুদ্ধই করেনি, পেশিশক্তি ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে আমার জমিতে জোর করে গাছ লাগিয়েছে। বাধা দিতে গেলে আমাকে ও আমার ছেলেদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং সবার সামনেই প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তাদের ভয়ে এলাকার কেউই মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না।"
তিনি আরও জানান, বিরোধপূর্ণ এই জমি নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। আদালতের মামলা চলমান থাকা অবস্থায় তায়জুল ইসলাম ও তার লোকজন বেআইনিভাবে এই কাজ করেছেন।
আজাদ আলী মাস্টার আরও বলেন, "এর আগেও আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সলঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলাম, কিন্তু কোনো সমাধান পাইনি। উল্টো তারা এখন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে আমাকে ও আমার ছেলেদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাদের অত্যাচার থেকে বাঁচতে আমরা আবার সলঙ্গা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।"
এ বিষয়ে অভিযুক্ত উজ্জ্বল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দখলের কথা স্বীকার করে বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে তারা আমাদের জমি দখল করে রেখেছিল। এখন সুযোগ পেয়েছি, তাই আমরা আমাদের জমিতে গাছের চারা রোপণ করে দখলে নিয়েছি।"
সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান, "অভিযোগটি আমরা পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.