
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা’র চুন্টা ইউনিয়নে ফুটবল টুর্ণামেন্টের নাম করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে সরাইল উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন রাজু’র বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) চুন্টা বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী’র সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
এ ঘটনায় সহযোগিতা করার বিষয়ে চুন্টা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবিরের নাম উঠলেও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি। বাংলা এডিশন’কে হুমায়ুন কবির বলেন, খেলার কালেকশনের বিষয়ে আমি অবগত না। খেলাধুলা শরীর ও মনকে প্রফুল্ল রাখে, এটি বিবেচনা করে আমি নিজে ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি।
এ বিষয়ে চুন্টা বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ী ইকবাল মিয়া বাংলা এডিশন’কে বলেন, ফুটবল টুর্ণামেন্টের নাম করে জয়নাল মামা আমার কাছে ১০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন, কিন্তু আমি ২ হাজার দিতে চাইলে অনেকটা জোরপূর্বক ৬ হাজার টাকা আদায় করে নিয়েছে। যেহেতু সকলে’ই দিচ্ছে তাই আমাকেও বাধ্য হয়ে দিতে হয়েছে।
ব্যবসায়ী জগবন্ধু পাল বলেন, ফুটবল খেলার জন্যে আমার ২৫০০ টাকা দিতে হয়েছে। আমি ৩৫ বছর যাবত চুন্টা বাজারে ব্যবসায়ী করে আসছি, এর আগে কখনো এমনভাবে জোরপূর্বক টাকা আদায় করা হয়নি।
এদিকে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে চুন্টা বাজারের শেবক মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। যদিও অজানা কারণে এ বিষয়ে পুরোপুরি মুখ খুলছে না দোকান মালিক।
তবে বাকবিতন্ডার বিষয়টি শুনেছে ও ভুক্তভোগী নিজে তার কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছে বলে জানিয়েছেন চুন্টা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মোঃ সেলিম।
এদিকে বেশ ক’জন ব্যবসায়ী মুখ খুললেও নীরবতা দেখাচ্ছে বহু ব্যবসায়ী। নিজের ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে অনেকেই প্রতিবাদ করার কিংবা প্রশাসনের দারস্থ হওয়ার সাহস পাচ্ছেন না বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
চুন্টা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মোঃ সেলিম বাংলা এডিশন’কে বলেন, ফুটবল টুূর্ণামেন্টের বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। তবে টাকা আদায়ের বিষয়ে লোকমুখে শুনতেছি ও আজ সকালে (৭ আগস্ট) চুন্টা বাজারের সনাতন ধর্মাবলম্বী এক ব্যবসায়ী আমার কাছে অভিযোগ দিয়ে গিয়েছে। এ বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন নেতাদের অবগত করবো।
তিনি আরও বলেন, জয়নাল উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব হলেও সে আওয়ামী লীগের আমলে আওয়ামী লীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুরের সঙ্গেই আঁতাত করে চলেছে, এ বিষয়ে আমার দলের সিনিয়র নেতাদের আগেও জানিয়েছি।
তবে অভিযোগের বিষয়ে সরাইল উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন রাজু বাংলা এডিশনকে বলেন, এটি চাঁদাবাজি নয়, কুট্টাপাড়া খেলার মাঠে একটি টুর্ণামেন্টে চুন্টার টিম বর্তমানে সেমিফাইনালে আছে, খেলাটি সম্পূর্ণ করতে দুই লাখ টাকার বেশি খরচ যাচ্ছে। সেজন্য চুন্টা বাজারের কিছু ব্যবসায়ী ও পরিচিতদের কাছ থেকে কিছু টাকা পয়সা নেওয়া হচ্ছে, তবে চাপ দিয়ে নয়।
এ বিষয়ে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মোশারফ হোসাইন বাংলা এডিশন’কে বলেন, বিষয়টি আমি এইমাত্র জানলাম এ ধরণের চাঁদাবাজির কোনো সুযোগ নেই, আমি আইনশৃঙ্খলা-বাহিনীকে বলবো এ ধরণের চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।