
নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা ১৩ জন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে সরকার। বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন তিনজন পুলিশ সুপার, আটজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং দুজন সহকারী পুলিশ সুপার।
রোববার (২৯ জুন) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে পৃথক ১৩টি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বলা হয়, সরকারি বিধিমালা অনুসারে পলায়নের অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনগুলিতে স্বাক্ষর করেন উপসচিব নাসিমুল গনি।
বরখাস্ত হওয়া তিন পুলিশ সুপার হলেন:
মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন, এটিইউ’র সাবেক এসপি, বরিশাল রেঞ্জে সংযুক্ত
মো. শাহজাহান, রংপুরের সাবেক এসপি, বর্তমানে চট্টগ্রাম রেঞ্জে সংযুক্ত
গোলাম মোস্তফা রাসেল, নারায়ণগঞ্জের সাবেক এসপি, বরিশাল রেঞ্জে সংযুক্ত
আট অতিরিক্ত পুলিশ সুপার:
এস এম জাহাঙ্গীর হাছান, নৌ পুলিশ; থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার নামে দীর্ঘ অনুপস্থিত
শাহ আলম আখতারুল ইসলাম, সিলেট ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার
এস এম শামীম, ডিএমপি
ইফতেখায়রুল ইসলাম, কক্সবাজার এপিবিএন
মিশু বিশ্বাস, জামালপুর ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার
হাসানুজ্জামান মোল্যা, রাঙামাটি এপিবিএন
রুবাইয়াত জামান, সুনামগঞ্জ ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার
মাসুদুর রহমান, বরিশাল র্যাব-৮
দুজন সহকারী পুলিশ সুপার:
মাহমুদুল হাসান, রাজারবাগ পুলিশ টেলিকম ভবন
মোহাম্মদ ইমরুল, কক্সবাজার উখিয়া এপিবিএন
বলা হচ্ছে, এসব কর্মকর্তা কেউ ছুটি নিয়ে, কেউ আবার ছুটি না নিয়েই কর্মস্থল ত্যাগ করেন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফেরত না আসায় এটি ‘পলায়ন’ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে দুই দফায় নোটিশ ইস্যু করেও সাড়া মেলেনি।
প্রশাসনিক উদ্বেগ
বিশ্লেষকরা বলছেন, একসঙ্গে এতজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার হঠাৎ অনুপস্থিতি ও বরখাস্তের ঘটনা নজিরবিহীন। এটি বাহিনীর শৃঙ্খলা, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ এবং কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক আনুগত্য নিয়েও প্রশ্ন তুলছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অনুপস্থিতির প্রকৃত কারণ ও পলায়নের উদ্দেশ্য অনুসন্ধানে পৃথক তদন্ত চলছে।