
নিজস্ব প্রতিবেদক: চীনের সহায়তায় আরব সাগরে বিপুল গ্যাসের মজুদ আবিষ্কার করেছে পাকিস্তান। তবে মজুদের সঠিক পরিমাণ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। দেশটির ধারণা, এ সম্পদ উত্তোলন সম্ভব হলে জ্বালানি খাতে আমদানিনির্ভরতা কমে অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। ইতিমধ্যে প্রকল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংস্থা এসএফসি।
ভারতও গত বছর অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস খনি আবিষ্কার করেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ওএনজিসির হিসাবে, খনি থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪৫ হাজার ব্যারেল তেল ও ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন সম্ভব হবে, যা দেশের মোট উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।
মিয়ানমার ২০১২ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির পরপরই বঙ্গোপসাগরে গ্যাস আবিষ্কার করে এবং সেখান থেকে এখনো কয়েক ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করছে। নিজস্ব চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রপ্তানিও করছে দেশটি।
কিন্তু বাংলাদেশ সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তির এক দশক পরও কার্যকর উদ্যোগ নিতে পারেনি। সর্বশেষ ২০২৪ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করলেও কোনো বিদেশি কোম্পানি অংশ নেয়নি। বর্তমানে গভীর বা অগভীর সমুদ্র ব্লকে কোনো বিদেশি কোম্পানির কার্যক্রম নেই।
ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক বদরুল ইমাম মনে করেন, “বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় গ্যাসের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু সময়মতো উদ্যোগ না নেওয়ায় বিদেশি কোম্পানিগুলো অন্য দেশে বিনিয়োগ করছে।”
পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, দরপত্রে সাড়া না পাওয়ার কারণ হিসেবে প্রফিট শেয়ার মার্জিন, জরিপ তথ্যের ঘাটতি ও কর্মীদের প্রফিট ফান্ড ভাগাভাগির বিষয়গুলো উঠে এসেছে। জ্বালানি বিভাগ এগুলো পর্যালোচনা করছে এবং নতুন করে দরপত্র আহ্বানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিনের অনীহা কাটিয়ে বাংলাদেশকে এখনই সমুদ্রসীমায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ধারাবাহিক পদক্ষেপ নিতে হবে, নইলে সম্ভাবনাময় এই খাত অনাবিষ্কৃতই থেকে যাবে।