নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন ও আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে ‘সংবিধান আদেশ’ এবং গণভোটের প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজনের সুপারিশ করা হয়েছে। তবে গণভোটের সময়সূচি নিয়ে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা দেখা দিয়েছে।
বিএনপির দাবি, জাতীয় নির্বাচনের পরে গণভোট হওয়া উচিত। তবে আলোচনার মাধ্যমে সবাই একমত হলে নির্বাচনের দিনেই তা আয়োজন করা যেতে পারে। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামী চাইছে জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট সম্পন্ন করে সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজন করতে। এই দাবিতে তারা রাজপথে কর্মসূচি শুরু করেছে। অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বলছে, সংবিধান ইস্যুতে গণপরিষদ নির্বাচন জরুরি।
বুধবার ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কমিশনের বৈঠকে এসব প্রস্তাব ওঠে আসে। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে তারা অনেক দূর এগিয়েছেন এবং দ্রুতই ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে আশাবাদী। তার ভাষায়, “বিষয়টি কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সাংবিধানিক আদেশ চ্যালেঞ্জ হতে পারে, তবে খারাপ নজির তৈরি করা উচিত নয়। একই বিষয়ে একাধিকবার গণভোট আয়োজনের যৌক্তিকতাও তিনি প্রশ্নবিদ্ধ করেন। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, নির্বাচনের আগেই গণভোট সম্ভব এবং জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সংস্কার কার্যকর করা উচিত।
জুলাই সনদে মোট ৮৪টি ধারা রয়েছে। এর মধ্যে কিছু ধারা নির্বাহী আদেশ বা অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নযোগ্য হলেও প্রায় ৩৪টি ধারার জন্য সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন। এখানেই দলগুলোর বিভক্তি সবচেয়ে বেশি।
ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, সংবিধান আদেশ ও গণভোটের বিষয়ে সরকারের কাছে একাধিক বিকল্প সুপারিশ দেওয়া হবে, যাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হয়।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, “আমরা গণপরিষদ নির্বাচন চাই। তা এ সরকারের মাধ্যমেই করতে হবে।” আর গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান অভিযোগ করেন, সরকার দায় না নিয়ে বল রাজনৈতিক দলগুলোর কাঁধে চাপিয়ে দিচ্ছে।
ফলে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মৌলিক ঐকমত্য গড়ে উঠলেও গণভোটের সময়সূচিই এখন বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.