
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীরে মজলিস মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক বলেছেন, রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংস্কার ছাড়া জনগনের কাছে আর কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, বারবার দলবাজি নির্বাচন, রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূলের অপচেষ্টা দেশের রাজনীতিকে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে গেছে। তাই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করে গণভোটের মাধ্যমে জনগণকে সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্ণ অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
তিনি আজ শনিবার (৮ নভেম্বর) বাদ জোহর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের মাসিক বৈঠকে সভাপতির বক্তব্য রাখছিলেন। পুরানা পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠক পরিচালনা করেন মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ।
মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কেউ তাড়াহুড়ো করবেন না। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে যদি জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনাকে ভুলে যান—তাহলে জনগণও আপনাদের ভুলে যাবে। হাজার হাজার ছাত্র-জনতা কাউকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য রক্ত দেয়নি; তারা বৈষম্য, অনাচার ও অবিচার দূর করার জন্য জীবন বাজি রেখেছিল। সুতরাং সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন দেশের জনগণ মেনে নেবে না। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে দীর্ঘ আলোচনার পর যে সংস্কার অবস্থানে আমরা উপনীত হয়েছি—তা থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। অবিলম্বে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান করতে হবে এবং নির্বাচনের আগে গণভোটের আয়োজন নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, ৪৭-এর দেশ বিভাগের চেতনা উপেক্ষার পরিণতি ছিল ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ; আর ৭১-এর চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে ৭২-এর সংবিধান রাষ্ট্রকে পশ্চাৎপদ করেছে। এর ধারাবাহিকতায় বারবার স্বৈরশাসকদের আগমন ঘটেছে, ভারতীয় আধিপত্যবাদকে শিকড়ে পৌঁছে দিয়েছে এবং দেশকে বৈষম্য ও অরাজকতার অতলে নিক্ষেপ করেছে। এই ৭২-এর সংবিধানের ভিত্তিতেই শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদের পথে এগিয়েছে।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ২৪-এর বিপ্লবের পর ৭২-এর সংবিধানের দোহাই দিয়ে যারা সংস্কারকে অপাংক্তেয় করতে চায়—তারা মূলত জনগণের ভয়েই প্রকাশ্যে ‘সংস্কার চায় না’ বলতে পারে না। জনগণকে বোকা ভাববেন না। শেখ হাসিনাও সংবিধানের কথা বলত এবং জনগণকে শোষণ করত। জনগণ তার বিচার করেছে—দেশ থেকে তাকে বের করে দিয়ে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং গণভোটের স্বতন্ত্র আয়োজন ছাড়া জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে কাউকে ক্ষমতায় বসানোয় জনগণের কোনো আগ্রহ নেই। অতীতের ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ কিংবা ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির মডেলের নির্বাচনে জনগণ আর যাবে না।
তিনি আন্দোলনরত আট দলের ঘোষিত যুগপৎ কর্মসূচি—১১ নভেম্বরের জনসভা সফল করার জন্য সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।,
বৈঠকে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন—সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, নায়েবে আমীর মাওলানা আফজালুর রহমান, মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, মুফতি সাঈদ নূর, মাওলানা মুহিউদ্দীন রব্বানী, মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী, মাওলানা মাহবুবুল । যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা আব্দুল আজীজ, মুফতি শরাফত হোসাইন ও মাওলানা শরীফ সাইদুর রহমান। এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা মুহাম্মদ ফয়সাল, মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, মুফতি ওজায়ের আমীন, মাওলানা নিয়ামতুল্লাহ, মাওলানা মুহসিনুল হাসান, মাওলানা হেদায়াতুল্লাহ হাদী, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাওলানা সামিউর রহমান মুসা, প্রচার সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া, অফিস সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমীন খান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা হাসান জুনাইদ, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জসিমউদ্দিন, মাওলানা নূর মুহাম্মাদ আজীজ ও সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক ক্বারী হোসাইন আহমদ।
নির্বাহী সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুফতি হাবীবুর রহমান, মাওলানা হোসাইন আহমদ, মুফতি হাবীবুর রহমান কাসেমী, মাওলানা সাব্বির আহমদ উসমানী, মাওলানা আব্দুস সোবহান, মাওলানা মুহসিন উদ্দীন বেলালী, মাওলানা আব্দুল মুমিন, মাওলানা মামুনুর রশীদ, মাওলানা মঈনুল ইসলাম খন্দকার, মাওলানা আনোয়ার মাহমুদ, মাওলানা মোহাম্মদ আলী, মাওলানা রেজাউল করিম, মুফতি নূর হোসাইন নূরানী, মাওলানা আনোয়ার হোসাইন রাজী, মাওলানা ছানাউল্লাহ আমিনী, মাওলানা রাকিবুল ইসলাম, মাওলানা মুর্শিদুল আলম সিদ্দীক ও মাওলানা জাহিদুজ্জামান প্রমুখ।,











