সংকট নিরসনে যাদের সহায়তা নিতে পারে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে সরকার কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সৃষ্টি হওয়ার জটিল পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য রাজনৈতিক পথ গ্রহণ করেছে। গত রাতে তিনজন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে সংলাপের দ্বার উন্মুক্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এখন শুধু রাজনৈতিক উদ্যোগই যথেষ্ট নয়। সমাজে এমন কিছু ব্যক্তি আছেন যাদের কাছে শিক্ষার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা আছে। যারা এখনও দেশের এবং শিক্ষার্থীদের অভিভাবক হিসাবে পরিচিত, স্বীকৃত। তাদেরকে সামনে আনা যেতে পারে। তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানাতে পারে এবং তাদের সাথে শিক্ষার্থীদের একটি সংলাপ হতে পারে। এই সমস্ত ব্যক্তিরা শিক্ষার্থীদের কাছে অভিভাবক তুল্য এবং তারা দলমতের উর্ধ্বে একটি ব্যক্তিগত অবস্থান ধরে রেখেছেন।

এই সমস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন-

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ: আবদুল হামিদ দুই দফায় রাষ্ট্রপতি ছিলেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে তার বিপুল জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কনভোকেশনে তিনি উপস্থিত হতেন এবং তার প্রাণচাঞ্চল্য স্বতঃস্ফূর্ত বক্তৃতা দিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের মাতিয়ে রাখতেন। এই সংকটে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের উদ্যোগ অনেকেই প্রত্যাশা করছেন। তারা মনে করছেন, তিনি যদি শিক্ষার্থীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান এবং শিক্ষার্থীদের সাথে বসার উদ্যোগ গ্রহণ করেন, তাহলে তার ইতিবাচক একটি ফলাফল আসতে পারে।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী একজন প্রাজ্ঞ এবং শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব। দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তিনি সবসময় প্রগতি এবং মুক্তির পথে। তিনি শান্তিকামী একটি মতবাদকে লালন করেন। তার নিরপেক্ষতা প্রশ্নাতীত। এই সময় যে সহিংসতা হানাহানি শুরু হয়েছে সেখানে দুই পক্ষকে একটি বিন্দুতে মিলিত করার ক্ষেত্রে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।

অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আরেকজন সম্মানিত শিক্ষক, যার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নাতীত। যিনি সকল দল মতের ঊর্ধ্বে একজন শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব। এক্ষেত্রে তাকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় নেওয়া যেতে পারে। সরকার এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে অবিশ্বাস দ্বন্দ্ব তা মেটানোর ক্ষেত্রে তিনি মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে পারেন।

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকও একজন গ্রহণযোগ্য এবং সম্মানিত ব্যক্তি। এখন বাংলাদেশে যে মুষ্টিমেয় কয়েকজনকে জাতির বিবেক মনে করা হয়, তার মধ্যে আবুল কাসেম ফজলুল হক ও একজন। এই সংকটের সময় তিনিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন। তার কাছেও সরকার অনুরোধ করতে পারে, তিনি যেন সংকট নিরসনে সরকার এবং শিক্ষার্থীদের সাথে একটি সংলাপের মধ্যস্থতা করেন। মূল সমস্যার জায়গা যেটি তা হলো শিক্ষার্থীরা সরকারকে বিশ্বাস করছে না৷ কাজেই শুধু রাজনৈতিক উদ্যোগে এই অবিশ্বাস দূর হবে না। এ কারণে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক এর মতো ব্যক্তিত্বরা এক্ষেত্রে উদ্যোগ নিলে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।’

ড. আইনুন নিশাত: ড. আইনুন নিশাত বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক। একজন পরিবেশ প্রকৌশলী। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তার একটি গ্রহণযোগ্যতা আছে। তিনিও দলমতের উর্ধ্বে একটি অবস্থানে আছেন। তিনি ও এই সংকটের সময় কান্ডারী হতে পারেন।

অনেকেই মনে করছেন সরকারের উচিত এরকম আরও যারা নিরপেক্ষ এবং সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব আছেন তাদেরকে দিয়ে একটি সংলাপের দরকার খুলে দেওয়া এবং দুই পক্ষের দূরত্বগুলো কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে: তারেক রহমান

অনলাইন ডেস্ক: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আজকে সময় এসেছে বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করার; আজকে সময় এসেছে বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার। এজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে

কৃষকদের মাথার খুলি-হাড় নিয়ে বিক্ষোভ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে, ঋণ শোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করা কৃষকদের মাথার খুলি ও হাড় নিয়ে বিক্ষোভ করেছে ভারতের তামিলনাড়ুরর কৃষকরা। মঙ্গলবার

‘আওয়ামী লীগের বিভক্তি এবং একলা চলো নীতি’

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ তার রাজনীতির ইতিহাসে সব চেয়ে সময় কাটাচ্ছে। টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় চতুর্থ মেয়াদে স্বস্তিদায়ক অবস্থায় দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে দলটি। কোন

সুইজারল্যান্ডের বিমানবন্দরে হেনস্তার শিকার আসিফ নজরুল

ডেস্ক রিপোর্ট: সুইজারল্যান্ডে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের হাতে হেনস্তার শিকার হয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সুইজারল্যান্ডের জেনেভাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস

নতুন এসপি ২৪ জেলায়

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর, কুমিল্লা, রাজশাহী, পাবনা, যশোর, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, ঝিনাইদহ, মাগুরা, টাঙ্গাইল ও নরসিংদীসহ দেশের ২৪ জেলায় পুলিশ সুপার (এসপি) নিয়োগ

পূরণ হচ্ছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ৫ শূন্য পদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ, ভাইস চেয়ারম্যানসহ নির্বাহী কমিটির ফাঁকা পদ পূরণের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড। একই সঙ্গে দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতেও