নিজস্ব প্রতিবেদক: শেখ হাসিনা স্বদেশে ফিরে না আসলে আমাদের কোন স্বপ্নই সফল হত না। বঙ্গবন্ধুকন্যা পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রায় আমরা দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে চলেছি।
দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা । বাংলাদেশের মানুষের ভাগোন্নয়নে তার গৃহীত বলিষ্ঠ সব পদক্ষেপ তাকে বিশ্বজুড়া খ্যাতি এনে দিয়েছে । শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।
সতের মে ছিল শেখ হাসিনা ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী মানুষটির কান্না ঝরানোর দিন। শেখ হাসিনা সেদিন জনসভায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেছিলেন, “আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছুই নেই এবং হারাবারও কিছুই নেই। আমি মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছি জীবন। আমি মানুষের কল্যাণ চাই।”
সেদিন মিটিং শেষে শেখ হাসিনা পিতৃগৃহে ফিরে যেতে পারেন নি জিয়ার বাঁধার কারণে। এরপর চলে শেখ হাসিনার সংগ্রাম, লড়াই ও গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য অবিনাশী আন্দোলন। এ আন্দোলনে বার বার তাকে মৃত্যুমুখে পতিত হতে হয়েছে। কিন্তু বিধাতার অসীম কৃপায় আজও তিনি বেঁচে আছেন। দেশ ও জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন।
শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা বিদেশে অবস্থানকালে ঢাকার ৩২ নম্বর সড়কের ৬৭৭ নম্বর বাড়িতে ঘটে নারকীয় ঘটনা। দেশী বিভীষণ, বিদেশী ষড়যন্ত্র ও স্বাধীনতা বিরোধী একটি চিহ্নিত চক্রের প্রত্যক্ষ মদদে একদল নরপশু বর্বর হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
পনেরই আগস্ট শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা কোথায় ছিলেন? ছিলেন ব্রাসেলসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সানাউল হকের বাসায়। আগস্টের নারকীয় ঘটনার পরে এই মানুষটি এতিম দুই বোনকে বাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। ঐদিন জাতীয় সংসদের প্রাক্তন স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর পাঠানো গাড়িতে শোকাতুর দুই বোন জার্মানি ফিরেছিলেন। এরপর পঁচাত্তর থেকে একাশির ১৭ মে পর্যন্ত শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনার দুঃসহ জীবন। তখন স্বদেশে ফিরার কথা চিন্তাও করা যেত না।
১৫ আগস্টের পর খুনি মোশতাক ও জিয়ারা অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতি বনে যান। খন্দকার মোশতাক প্রায় তিন মাস ক্ষমতায় ছিলেন। এরপর জিয়ার সকল পাকিস্তানি কর্মকাণ্ড। যথাক্রমে-বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের রেহাই দান, জিন্দাবাদ প্রবর্তন, বাঙালির পরিবর্তে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ প্রবর্তন, সংবিধানের মূল স্তম্ভ পরিবর্তন, মুক্তিযুদ্ধের পরিবর্তে স্বাধীনতা যুদ্ধ সংযোজন, সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার অবলুপ্তি ঘটিয়ে দেশটিকে হাফ পাকিস্তানে পরিণত করেন। একাত্তরের চরম শত্রু শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেন জিয়াউর রহমান। এভাবেই জিয়া ক্ষমতায় ছিলেন ১৯৮১ সাল পর্যন্ত। জিয়া আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চালায় স্টিম রোলার। বঙ্গবন্ধু শব্দটি ছিল নিষিদ্ধ। এক সময় জিয়া সেনানিবাসে রাজনৈতিক দল গঠন করে রাজনীতি শুরু করেন। খালেদ মোশাররফ ও কর্নেল তাহেরদের ঠান্ডা মাথায় খুন করেন। অপশাসন, সেনাভীতি ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের নিধন ছিল তার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।
এমনই এক কঠিন পরিবেশে শেখ হাসিনাকে স্বদেশে ফিরতে হয়। তখন তিনি সর্বহারা। শোক ও বেদনায় মূর্তিমান এক অবয়ব।
শেখ হাসিনা সকল ভয়ভীতি উপক্ষো করে নির্যাতিত নিপীড়িত বাঙালির ভাত ও ভোটের অধিকার এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় দঢ়সংকল্প নিলেন। ভারতে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এ সময় মিত্রমাতা ইন্দিরা গান্ধীর সহায়তা লাভ করেন। ভারত তাকে একাত্তরের মতো আশ্রয় দিয়েছিল সেই দুঃসময়ে।
দেশরত্ন শেখ হাসিনা এখন সারা বিশ্বে এক সুপরিচিত নাম। সে সুখ্যাতি তিনি অর্জন করেছেন নানামাত্রিক কর্মপ্রয়াসের অবিস্মরণীয় অধ্যায় রচনার মাধ্যমে। দক্ষ রাজনীতিবিদ-নীতি আদর্শ আর সততা এবং সাহসী উদ্যোগের অনন্য অসাধারণ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডের ফলে দেশ আজ উন্নয়নের বিশ্ব রোল মডেল। বঙ্গবন্ধুকন্যার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি বারবার উচ্চারিত হয়েছে যে, তিনি সকল ক্ষেত্রে অসামান্য সোনালি অধ্যায় রচনা করতে সমর্থ হয়েছেন, তা আজ সচেতন নাগরিক সমাজ একবাক্যে স্বীকার করছে।'
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.