নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এত কম সময়ে কোনো সরকার এত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি, যতটা অর্জন করেছে এই অন্তর্বর্তী সরকার দেড় বছরে। সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার হয়েছে। অতীতের নির্যাতন ও অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আদালতে জবাবদিহিতা শুরু হয়েছে এবং শেখ হাসিনাকেও তার অবস্থান বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি আরও লেখেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এবং তাদের নির্ধারিত প্রায় সব লক্ষ্যই অর্জিত হয়েছে। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, নাম ছাড়া সব দিক থেকেই অন্তর্বর্তী সরকার যেন একটি এনজিও-গ্রাম-অতি সাধারণ, দুর্বল ও গ্রাম-স্তরের কাঠামো। অনেকের কাছে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্বল প্রশাসন হিসেবে পরিচিত এতটাই দুর্বল যে যুক্তরাষ্ট্রও তাদের সঙ্গে পারস্পরিক শুল্কচুক্তিতে এগোতে চায়নি। তিনি উল্লেখ করেন, ৫০০ দিনে ১ হাজার ৭০০-রও বেশি বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, নতুন আইন পাসে জটিলতা এবং তুলনামূলকভাবে ছোট গোষ্ঠীর চাপেও নতি স্বীকার করাকে কেন্দ্র করে অনেকেই এই সরকারকে ভীত হিসেবে দেখেছেন। এমনকি পুলিশ প্রধান থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অদক্ষতা এবং নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও শোনা গেছে। কেউ কেউ তাদের কিছু না করা সরকার হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন। এসব সমালোচনার পরও শফিকুল আলম দাবি করেন, বাস্তবতা ভিন্ন। তার ভাষায়, ফিরে তাকালে বলতে হয়-গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ সরকার আর আসেনি। তারা তাদের অধিকাংশ লক্ষ্যই অর্জন করেছে। তার দাবি, অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্যগুলো হচ্ছে, শান্তি ও স্থিতিশীলতা: বিপ্লব-পরবর্তী প্রতিশোধমূলক সহিংসতা বন্ধ হয়ে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। মার্কিন শুল্কচুক্তিতে অগ্রগতি: কোনো লবিং ফার্ম নিয়োগ ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। রেকর্ড আইন প্রণয়ন: ১৫ মাসেই রেকর্ডসংখ্যক আইন পাস হয়েছে, যার মধ্যে শ্রম আইন সংস্কার রয়েছে। ঐতিহাসিক রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম: জুলাই ডিক্লারেশন ও জুলাই চার্টার ভবিষ্যৎ রাজনীতির একটি নতুন পথরেখা তৈরি করেছে। বিচার বিভাগ শক্তিশালীকরণ: সুপ্রিম কোর্ট নি¤œ আদালতের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে, ফলে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে মামলা ও জামিন প্রভাবিত করা কঠিন হবে।,
বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি: ইউরোপীয় শীর্ষ বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান লালদিয়া টার্মিনালে বিনিয়োগের চুক্তি করেছে, যা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ইউরোপীয় বিনিয়োগ। পররাষ্ট্রনীতির নতুন কাঠামো: নতুন নীতিমালা বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা: অর্থনীতি পুনরায় উন্নয়নমুখী হয়েছে। ব্যাংক খাতের লুটপাট কমেছে, টাকা স্থিতিশীল হয়েছে এবং খাদ্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ থেকে কমে ৭ শতাংশে নেমেছে। জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা: অতীতের নির্যাতন ও অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আদালতে জবাবদিহিতা শুরু হয়েছে এবং শেখ হাসিনাকেও তার অবস্থান বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। গুম ও রাজনৈতিক সহিংসতার অবসান: জোরপূর্বক গুম বন্ধ হয়েছে এবং রাজনৈতিক সহিংসতা-নির্ভর রাজনীতি নিক্রিয় হয়েছে। সংস্কৃতির জাগরণ: নতুন ডকুমেন্টারি ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন জনমত তৈরি করেছে, যাকে অনেকে ফারুকী ইফেক্ট বলছেন। নিরাপত্তা সংস্থার সংস্কার: র্যাব আইন মেনে কাজ করছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিরোধীদের হয়রানি কমিয়েছে এবং গত ১৬ মাসে কোনো সাজানো ক্রসফায়ারের অভিযোগ ওঠেনি।,
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.