সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে অবৈধ ক্যাসিনো এজেন্টদের সম্পদের পরিমান। কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছেনা ক্যাসিনো সম্রাটদের কারসাজি। অবৈধ বেটিংসাইট পরিচালনা করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাচ্ছে ক্যাসিনো সম্রাটদের। সিরাজগঞ্জেও তার অনুরুপ। চেহারা দেখে বোঝার উপায় নেই মাত্র ১৯ বছর বয়সে এজেন্টদের তালিকায় নাম লিখিয়ে অল্প সময়ে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বুলবুল নামের এক যুবক।
ক্যাসিনো সম্রাট বুলবুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের বুদ্দু মিয়ার ছেলে। জানা যায়, ১৯ বছর বয়সী বুলবুলের আয়-রোজগারের কোন নির্দিষ্ট উৎস নেই। তবে হঠাৎ করেই শোনা যাচ্ছে কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি। জুয়ার সাইট থেকে হাতিয়ে নেওয়া টাকা দিয়ে ১ বছরের মধ্যেই কিনে ফেলেছেন ২৫ লাখ টাকার জমি, সেই জমিতে আবার ১০ লাখ টাকা খরচ করে গড়ে তুলেছেন বাড়ি, আড়াই লাখ টাকার বাইক, কিনেছেন কয়েকটি গরু, নিজ খরচে দিয়েছেন বোনের বিয়ে, ৩ লাখ টাকা খরচ করে কয়েক মাস আগে বিয়ে করেছেন বুলবুল নিজেও। জনমনে প্রশ্ন-নদীগর্ভে জমি-জমা হারানো নিঃস্ব একটি পরিবার কিভাবে এত অল্প সময়ে এসব করলো।
গোপনসূত্রে জানা যায়, বুলবুলের নিয়ন্ত্রনে কাজ করছে দেশের বিভিন্ন জেলার কয়েকশত কর্মী। বুলবুলের গ্রুপে কর্মরত কর্মীদের কাজ এমন তা হলো উঠতি বয়সের তরুণ, যুবক ও শিক্ষার্থীদের জুয়া বা বেটিং সাইট সম্পর্কে জানানো এবং ক্যাসিনো একাউন্ট খুলতে আগ্রহী করে তোলা। পরবর্তীতে অল্প টাকা জুয়ার একাউন্টে ডিপোজিট করলে খুব সহজেই লাভবান হওয়া যাবে এমন প্রস্তাব রাখে। তারপর শুরু হয় আরেক গ্রুপের কাজ-টাকা ডিপোজিট করার পর কিছু টাকা প্রোফিট দিয়ে জুয়াতে এডিক্টেড করে ফেলে। লোভে পড়ে যখন বেশি টাকা ডিপোজিট করে ফেলে সেই সম্পূর্ণ টাকাটা ক্যাসিনো সাইটে নিয়োজিত বুলবুলের কর্মীদের মাধ্যমে একটা বড় অংশ চলে আসে তার মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যম বিকাশ,রকেট অথবা নগদ একাউন্টে। এভাবেই কয়েকটি বেটিং সাইট পরিচালনা করে কামিয়ে নিয়েছেন কোটি-কোটি টাকা। বুলবুলদের ৫ বছর আগের দিনগুলোতে নজর দিলে দেখা যায়, যমুনা নদীর ভাঙনে ভিটে-মাটি হারিয়ে রতনকান্দির বাহুকা এলাকা থেকে নিঃস্ব হয়ে চলে আসে তার মামার বাড়ি সড়াতৈল এলাকায়। বুলবুলের বাবা অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে কোনরকমভাবে সংসার চালাতো। তবে অবৈধ ক্যাসিনো সাইটের তালিকায় নাম লেখানোর পর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বুলবুলকে।
দিন-দিন ফুলে-ফেঁপে উঠতে থাকে এই যুবক। এখন খুব আরাম-আয়েশেই দিন পার করছেন বুলবুলসহ তার পরিবারের সদস্যরা। ৬ মাস আগে ১২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার কারণে পাশ্ববর্তী জেলা বগুড়া থেকে প্রশাসনসহ ক্যাসিনো গ্রুপের কয়েকজন এজেন্ট গভীর রাতে বুলবুলের বাড়িতে এসে ৮ লাখ টাকা ফেরত নিয়ে যায়। যা রতনকান্দি ইউনিয়নের সড়াতৈল,গজারিয়া ও শ্যামপুর গ্রামের অধিকাংশ মানুষই এই বিষয়ে অবগত। এ বিষয়ে ক্যাসিনো সম্রাট বুলবুল বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে আমি ক্যাসিনোর সাইট চালানো বাদ দিয়েছি। পুরো থানা পুলিশ এসেও আমার কিছুই করতে পারবেনা। সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি') হুমায়ুন কবির জানান, ক্যাসিনো এজেন্টদের কোনো ছাড় দেওয়া হবেনা। ক্যাসিনো এজেন্টদের তথ্য পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.