নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদুল আজহার পরও প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর ধারা স্বাভাবিক রয়েছে। চলতি জুন মাসের প্রথম ২১ দিনেই দেশে এসেছে প্রায় ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলার, ফলে অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই মোট রেমিট্যান্স ২৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে—বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে যা সর্বোচ্চ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, হুন্ডি বা অনানুষ্ঠানিক পথে অর্থ প্রেরণের ঝুঁকি এড়াতে প্রবাসীরা এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানোকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ডলারের উচ্চ বিনিময় হার এবং অর্থ পাচার কমে আসাও এ প্রবণতার পেছনে বড় কারণ। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে, যা ফের ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ঈদের আগে মে মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৯৭ কোটি ডলার, যা একক মাসে দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তার আগে মার্চে এসেছিল সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলার। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রবাসী আয় ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। আগস্টে ২২২ কোটি ডলার থেকে শুরু করে মে মাস পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে উল্লেখযোগ্য হারে—সেপ্টেম্বরে ২৪০, অক্টোবরে ২৩৯, নভেম্বরে ২২০, ডিসেম্বরে ২৬৩, জানুয়ারিতে ২১৮, ফেব্রুয়ারিতে ২৫২, মার্চে ৩২৯, এপ্রিলে ২৭৫ এবং মে মাসে ২৯৬ কোটি ৯৫ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে জানা যায়, চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাস ২১ দিনে (১ জুলাই–২১ জুন) দেশে এসেছে ২ হাজার ৯৪৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলার (২৯.৪৯ বিলিয়ন)। এর আগে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০–২১ অর্থবছরে—২৪.৭৭ বিলিয়ন ডলার।
রেমিট্যান্স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। ২০ জুন পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১.৩৮ বিলিয়ন ডলারে, যা ১৫ জুন ছিল ২০.৮৬ বিলিয়ন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব মতে, মোট রিজার্ভ বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ২৬.৫৬ বিলিয়ন ডলারে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এই ঊর্ধ্বমুখী রেমিট্যান্স প্রবাহ দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে এবং বৈদেশিক লেনদেনে আস্থা ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.