
নিজস্ব প্রতিবেদক: পঞ্চগড়ে দুই বছর বয়সী শিশুর গলায় ছুরি ধরে তার মাকে (২৮) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার তিন মাইল সুরিভিটা এলাকায় একটি চা বাগানে এই লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার বিকেলে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—সদর উপজেলার জগদল বাজার এলাকার জনি ইসলাম (২৭), বিপ্লব হোসেন (২৫), মকছেদুল ইসলাম (৩৩) এবং সাতমেড়া ইউনিয়নের বদিনাজোত এলাকার সাদেকুল ইসলাম (২৮)।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীর ভাষ্যমতে, শুক্রবার রাতে তিনি তার অসুস্থ দুই বছরের ছেলেকে নিয়ে ইজিবাইকে করে বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে তিনমাইল সুরিভিটা এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে আরেকটি ইজিবাইকে আসা পরিচিত চালক জনি তাকে নাম ধরে ডাকেন। ইজিবাইক থামালে জনিসহ ছয়জন তাকে জোর করে পাশের একটি চা বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে তার সন্তানের গলায় ছুরি ধরে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে অভিযুক্তরা তাকে সড়কের ধারে ফেলে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা ওই নারীকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দেয়। খবর পেয়ে রাত আনুমানিক একটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই নারী ও তার সন্তানকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, “আমার ছোট্ট ছেলের গলায় ওরা ছুরি ধরেছিল। আমি তখন নিরুপায় হয়ে পড়ি। চিৎকার করতে চাইলে ভয়ভীতি দেখায়। এরপর একে একে ছয়জন আমাকে ধর্ষণ করে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। কিন্তু এখন আমার কাছের লোকজনই আপসের জন্য চাপ দিচ্ছে।”
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আবুল কাশেম জানান, “রাতে পুলিশ এক নারীকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হতে প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি শারীরিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছেন।”
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ হিল জামান বলেন, “ভুক্তভোগীর জ্ঞান ফেরার পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”