
অনলাইন ডেস্ক: জার্মানিতে ২০২৪ সালে স্বীকৃত আশ্রয়প্রার্থী ও সুরক্ষার নিশ্চয়তা পাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ লাখে, যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪.১ শতাংশ। এই অবস্থাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে শরণার্থী নীতিতে কড়াকড়ি আরোপের পথে এগোচ্ছে দেশটির নতুন রক্ষণশীল সরকার।
জার্মানির সেন্ট্রাল রেজিস্টার অব ফরেইন ন্যাশনালস-এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে আশ্রয় ও সুরক্ষার মর্যাদা পাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েছে অন্তত ১ লাখ ৩২ হাজার। এদের মধ্যে ইউক্রেন, সিরিয়া, আফগানিস্তান, ইরাক, তুরস্ক ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ব্যক্তিরা রয়েছেন। শুধুমাত্র ইউক্রেন থেকেই এসেছেন ১০ লাখের বেশি যুদ্ধ শরণার্থী।
দেশটির ফেডারেল পরিসংখ্যান অফিসের হিসাব বলছে, আশ্রয়প্রার্থীদের গড় বয়স ৩২ বছর, যেখানে জার্মানদের গড় বয়স ৪৫ বছর ছয় মাস। এদের প্রায় ৪৫ শতাংশই নারী, ইউক্রেনীয়দের মধ্যে এই হার ৬০ শতাংশ। পাশাপাশি এক চতুর্থাংশ শরণার্থী ১৮ বছরের নিচে।
বর্তমানে ৮২ শতাংশ স্বীকৃত শরণার্থীর বসবাসের অনুমতি রয়েছে। তবে ১ লাখ ৭১ হাজার আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন বাতিল হওয়া সত্ত্বেও তারা এখনো জার্মানিতে অবস্থান করছেন। এ ছাড়া ‘সহনশীলতা’ নীতির আওতায় আরও ১ লাখ ৩৬ হাজার মানুষকে অস্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডোব্রিন্ট আশ্রয় নীতিতে বড় পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন। ম্যার্ৎসের লক্ষ্য, প্রতিবছর আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা এক লাখের নিচে নামিয়ে আনা। অন্যদিকে ডোব্রিন্ট চান এই সংখ্যা দুই লাখের নিচে রাখতে। তিনি সতর্ক করে বলেন, “সমাজে শরণার্থীদের অন্তর্ভুক্তিরও একটি সীমা আছে।”
বর্তমানে জার্মান সরকার প্রতিবেশী ৯টি দেশের সীমান্তে কড়া নজরদারি ও আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর সমালোচনার মুখে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জার্মানি একদিকে শরণার্থীর ঢল ঠেকাতে চাইলেও, অন্যদিকে শ্রমবাজারের ঘাটতি পূরণে নিয়মিত অভিবাসনের পথ সুগম করার ওপর জোর দিচ্ছে—যা নীতিগতভাবে এক জটিল সমন্বয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।