
অনলাইন ডেস্ক: লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীদের হামলায় ‘এটারনিটি সি’ নামের একটি লিবারিয়ান পতাকাবাহী কার্গো জাহাজ ডুবে গেছে। এতে চারজন নাবিক নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ১৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ছয়জন নাবিককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, যারা সমুদ্রে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ভেসে ছিলেন। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
ইরান-সমর্থিত হুতিগোষ্ঠী দাবি করেছে, তারা কয়েকজন নাবিককে আটক করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েমেন মিশন থেকে হুতিদের বিরুদ্ধে নাবিক অপহরণের অভিযোগ এনে অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।
জাহাজটিতে মোট ২৫ জন নাবিক ছিলেন, যাদের মধ্যে ২১ জন ফিলিপাইনের, একজন রুশ, এবং তিনজন সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষী (গ্রিক ও ভারতীয়সহ)। সোমবার প্রথম দফায় সমুদ্র ড্রোন ও স্পিড বোট থেকে রকেটচালিত গ্রেনেড ছোড়া হয়। পরদিন মঙ্গলবার ফের হামলার পর জাহাজটি গতকাল বুধবার সকালে ডুবে যায়।
হুতিদের সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা কিছু নাবিককে উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়েছে এবং নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। যদিও হামলার ভিডিও প্রকাশ করা হলেও তা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।
এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক শিপিং সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব শিপিং ও বিআইএমসিও এক বিবৃতিতে হতবাক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলেছে, “এটি বেসামরিক নাবিকদের জীবনের প্রতি চরম অবহেলা।” একইসঙ্গে লোহিত সাগরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার দাবি জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে হুতিরা ১০০টিরও বেশি জাহাজে হামলা চালিয়েছে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতির অংশ হিসেবে এসব হামলার দাবি করলেও, চলতি বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এক চুক্তির পরও হামলা বন্ধ হয়নি।
বাব আল-মান্দাব প্রণালী হয়ে চলাচলকারী জাহাজের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। গত ১ জুলাই যেখানে ৪৩টি জাহাজ চলাচল করেছিল, ৮ জুলাই তা নেমে এসেছে ৩০-এ। একইসঙ্গে জ্বালানি তেলের দামও বেড়েছে, যা ২৩ জুনের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
গ্রিসভিত্তিক ডায়াপলাস নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে, “আমরা শেষ আলো পর্যন্ত নিখোঁজ নাবিকদের খোঁজ চালিয়ে যাব।” সৌদি আরব ও গ্রিসের মধ্যে হামলা নিয়ে কূটনৈতিক আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
সূত্র: রয়টার্স